Search
Close this search box.

বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

বাংলাদেশকে উড়িয়ে দিল জিম্বাবুয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার : ক্যাচ মিস, ফিল্ডিং মিসের ব্যর্থতায় প্রথম ওয়ানডেতেও হারল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের কাছে উড়ে গেল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি সিরিজে জেতার পর প্রথম ওয়ানডেতেও বাংলাদেশকে হারিয়ে দিল জিম্বাবুয়ে। ৫ উইকেটের জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়েও গেল জিম্বাবুয়ে।

হারারে স্পোর্টস ক্লাবে টস জিতে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার লিটন কুমার দাসের ৮১, এনামুল হক বিজয়ের ৭৩, তামিম ইকবালের ৬২ ও মুশফিকুর রহিমের অপরাজিত ৫২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ৫০ ওভারে ৩০৩ রান করে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সপ্তমবারের মতো তিনশ’ রানের বেশি স্কোর গড়ে বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ৪৮.২ ওভারে ৩০৭ রান করে জিতে জিম্বাবুয়ে। দুই সেঞ্চুরিতে, সিকান্দার রাজা (১৩৫*) ও ইনোসেন্ট কাইয়ার (১১০) অসাধারণ ব্যাটিংয়ে জয় তুলে নিয়েছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা ১৯ ওয়ানডে ম্যাচে হারের পর জিতে জিম্বাবুয়ে। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩০০ রানের উপরে টার্গেট নিয়ে জিতল জিম্বাবুয়ে।

জিম্বাবুয়ের ইনিংসে শুরুতেই আঘাত করা যায়। ৬ রানের মধ্যে ২ উইকেট তুলে নেওয়া যায়। এরপর ইনোসেন্ট কাইয়া ও ওয়েসলি মাধেভেরে মিলে অনেকটা পথ এগিয়ে নেন। ৬২ রান পর্যন্ত দুইজন উইকেটে টিকে থাকেন। এই সময়ে মাধেভেরে (১৯) রান আউট হয়ে যান। চতুর্থ উইকেটে কাইয়া ও সিকান্দার রাজা মিলে ম্যাচ জেতানো জুটিই গড়ে ফেলেন। কাইয়া এরমধ্যে চতুর্থ ওয়ানডে খেলতে নেমে দ্বিতীয় হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। কাইয়া ও রাজা মিলে দলকে ১০০ রানেও নিয়ে যান। দুইজন মিলে ৫০ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। রাজাও হাফসেঞ্চুরি করে ফেলেন। ২১তম হাফসেঞ্চুরি করেন।

দুইজন মিলে দলকে ২০০ রানেও নিয়ে যান। দেড়শ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। বাংলাদেশের বিপক্ষে চতুর্থ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটিও হয়ে যায়। কাইয়ার একাধিক ক্যাচ মিস হয়। কাইয়া ১১৫ বলে সেঞ্চুরিও করে ফেলেন। যেখানে ৬৪ ও ৭৪ রানে আউট হতে পারতেন, সেখানে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করেন কাইয়া। ৮১ বলে রাজাও ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি হাকিয়ে ফেলেন। দুইজনই সেঞ্চুরি হাকান। বাংলাদেশের হারের শঙ্কা যেন তৈরী হয়ে যায়। কাইয়া ও রাজা মিলে বাংলাদেশের বিপক্ষে যে কোন উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। অবশেষে গিয়ে ২৫৪ রানে কাইয়াকে (১১০) আউট করেন দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ১২২ বলে ১১ চার ও ২ ছক্কায় ১১০ রান করে আউট হন কাইয়া। তাতে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলে। দুইজনের ১৯২ রানের জুটি হয়।

কাইয়া আউট হলেও রাজা ঠিকই উইকেটে থাকেন। তাতে করে ম্যাচ জিম্বাবুয়ের হাতেই নিয়ন্ত্রন থাকে। রানের চেয়ে বল বেশি থাকায় জিম্বাবুয়ের স্বস্তিও যুক্ত থাকে। শেষে গিয়ে লুক জংউই (২৪) আউট হন। কিন্তু রাজা ১০৯ বলে ৮ চার ও ৬ ছক্কায় অপরাজিত ১৩৫ রান করে ম্যাচ জেতান।

বাংলাদেশের শুরুটা হয় অসাধারণ। টি-টোয়েন্টিতে শুরুতেই উইকেট গেলেও ওয়ানডেতে দুই ওপেনার তামিম ও লিটন মিলে দলকে ১১৯ রানে নিয়ে যান। এমন সময়ে গিয়ে ৮৮ বলে ৯ চারে ৬২ রান করে আউট হয়ে যান তামিম। বড় জুটি ভাঙ্গে। তবে এত বড় জুটি গড়ে আউট হওয়ার আগেই তামিম ইতিহাস গড়ে ফেলেন। দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে ৮ হাজার রান করেন তামিম। ৫৪টি ওয়ানডে হাফসেঞ্চুরিও করেন।

শুক্রবার বাংলাদেশের যে ব্যাটসম্যানই ব্যাটিংয়ে নেমেছেন, রান পেয়েছেন। বড় ইনিংস খেলেছেন। তামিম আউট হওয়ার পর যেমন লিটন ও এনামুল হক বিজয় মিলে দলকে ১৭১ রানে নিয়ে যান। আশা দেখা হয়, দুইজন মিলে দলকে ২০০ রানেও সহজেই নিয়ে যাবেন। কিন্তু ১৭১ রান হতেই অসাধারণ ব্যাটিং করতে থাকা লিটন রান নেওয়ার সময় ব্যথা অনুভব করেন। এরপর লিটনকে স্ট্রেচারে করে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। ৮৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৮১ রান করে সপ্তম হাফসেঞ্চুরি করে স্বেচ্ছায় অবসর নিতে হয় লিটনকে। তাতে করে লিটন-বিজয়ের জুটি ৫২ রানের বেশি এগিয়ে যেতে পারেনি।

লিটন মাঠ ছাড়ার পর মুশফিক ব্যাট হাতে নামেন। এবার বিজয় ও মুশফিক মিলে উইকেটে জমে যান। একটুর জন্য শতরানের জুটি হতে পারেনি। দলের ২৬৭ রানে গিয়ে ৬২ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৩ রান করা বিজয় আউট হয়ে যান। তিনবছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমেই হাফসেঞ্চুরি হাকান বিজয়। চতুর্থ হাফসেঞ্চুরি করে আউট হন। দুইজনের জুটি ৯৬ রান স্কোরে যোগ করে।

আর কোন উইকেটই হারায়নি বাংলাদেশ। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে এরপর দলকে ৩০৩ রানে নিয়ে যান মুশফিক। দুইজন মিলে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রানের জুটি গড়েন। মুশফিক ৪৯ বলে ৫ চারে অপরাজিত ৫২ রান করেন। ৪২তম হাফসেঞ্চুরি করেন। আর রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ২০ রান। বিশাল রান গড়ার পর মনে হয়, ম্যাচটি জিততে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু তা আর হয়নি। রাজা ও কাইয়ার সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের হারই হয় নিয়তি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ