মিথুন আশরাফ – টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আজ লড়াই করবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি দল ভারত ও পাকিস্তান। মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২ টায় ম্যাচটি শুরু হবে। বিশ্বকাপের সবচেয়ে আলোচিত খেলা এটি। অবশ্য সবসময়ই তা থাকে। ভারত ও পাকিস্তানের মহারণ বলে কথা। সবসময়ই এ ম্যাচ নিয়ে থাকে উত্তেজনা।
এবার তো উত্তেজনা আরও বেশি। যেহেতু গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল বাবর আজমের দল পাকিস্তান। প্রথমবারের মতো কোন বিশ^কাপে পাকিস্তানের কাছে হারে ভারত। এবার আবার বিশ^কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের ধারায় ফেরার চেষ্টায় নামবে ভারত। যদি আবার হার হয়, তাহলে বাবর আজমরা উল্লাসে মাতবেন।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হোক কিংবা ওয়ানডে বিশ্বকাপ, পাকিস্তান গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ভারতের বিপক্ষে কখনোই জিততে পারেনি। ১৯৯২ সাল থেকে দুই দল ওয়ানডে বিশ্বকাপে লড়াই করে ৭টি ম্যাচ খেলে। একটিতেও পাকিস্তান জিততে পারেনি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০০৭ সাল থেকে লড়াই করে ২০১৬ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ভারতের বিপক্ষে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি পাকিস্তান। টানা পাঁচ বিশ্বকাপে হারে। কিন্তু গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়া বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারিয়ে দেয় পাকিস্তান। ইতিহাস গড়ে। কখনো যা হয়নি। তা গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে হয়েছে। এবারও পাকিস্তানের আশা ভারতকে হারিয়ে দেবে। সবশেষ এশিয়া কাপেও দুই দলের শেষ লড়াইয়ে পাকিস্তানই জিতেছিল।
পাকিস্তানের অধিনায়ক এবারও বাবর আজমই থাকছেন। তবে এবার বিশ্বকাপে ভারতের অধিনায়ক হচ্ছেন রোহিত শর্মা। গত আসরে বিরাট কোহলির নেতৃত্বে পাকিস্তানের কাছে হারে ভারত। এবার কী হবে? রোহিত শর্মা বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়েই ভাবছি আমরা। যখনই পাকিস্তানের মুখোমুখি হই, এটি সবসময়ই ব্লকবাস্টার। মানুষ অন্য যে কোনো কিছুর চেয়ে এ ম্যাচ দেখতে এবং চারপাশের উত্তেজনার আঁচ নিতে চান। অবশ্যই তারা ক্রিকেটও উপভোগ করতে চান। তবে একই সঙ্গে সমর্থক-দর্শকদের কারণে তৈরি হওয়া স্টেডিয়ামে আবহ, এমনকি যারা বাড়ি থেকে খেলা দেখে পুরো ব্যাপারটাই অসাধারণ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর ক্রিকেটার হিসেবে আমাদের জন্য এটি অবশ্যই বড় একটি ম্যাচ। এ লড়াই দিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করব আমরা। তবে একই সঙ্গে আমরা নিজেদের নির্ভার রাখতে চাই এবং নিজ নিজ জায়গা থেকে আমাদের কী করণীয় সেদিকে মনোনিবেশ করতে চাই। কারণ এটিই আমাদের চাবিকাঠি হবে। প্রত্যেকে যদি ম্যাচের সময় শান্ত থাকতে পারি, আমরা যে ফল চাচ্ছি, সেটি পাব। যে কোনও পরিস্থিতির জন্য আমাদের তৈরি থাকতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘যদি পরিস্থিতি বিচার করেন, তবে টস গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। সকালে যখন উঠি, অনেক বিল্ডিং মেঘের নীচে ছিল। এখন সেখানে রোদ। যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী ম্যাচ ছোট হয়ে দাঁড়ায়, আমরা সেভাবেই ক্রিকেট খেলব। ছেলেদের অনেকেরই এধরণের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সৌভাগ্যবশত আমরা ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এমনই একটি ম্যাচ খেলেছি, যেটি ৮ ওভার প্রতি ইনিংসের ছিল।’
বাবর আজম বলেছেন, ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেন, আমরা ১০০ শতাংশ মাঠে দিতে প্রস্তুত। এটি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। নির্দিষ্ট দিনে যে কেউ চমকে দিতে পারে, যে কেউ ম্যাচ জেতাতে পারে। আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেক উঁচুতে। তো ম্যাচের দিন আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে।’
ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ ঘিরে রোমাঞ্চ-উত্তেজনা বিরাজ করে সমর্থক থেকে শুরু করে দুদলের ক্রিকেটারদের মাঝে। সবচেয়ে হাই ভোল্টেজ ম্যাচ বলে কথা। এবার দেখা যাক, কোন দল জিতে।