মিথুন আশরাফ – জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে ৮১টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। দুই দলের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি লড়াই হয়েছে ১৯ বার। সেই ১৯৯৭ সাল থেকে ওয়ানডে এবং ২০০৬ সাল থেকে দুই দল পরস্পরের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলে। কিন্তু কখনোই এই দুই দলের মধ্যকার বিশ্বকাপে কোন লড়াই দেখার মিলেনি। এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সময় সকাল ৯ টায় ব্রিসবেনে দুই দল কোন বিশ্বকাপে লড়াই করবে। প্রথম লড়াইয়েই জিম্বাবুয়েকে হারাতে চায় বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দলের টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট শ্রীধরন শ্রীরাম এমনই ইঙ্গিত করেছেন। তিনি ভবিষ্যত বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলকে নিয়েই আসলে ভাবছেন। তবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েও আছে তার চিন্তা। তিনি বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে খুব ভালো টি-টোয়েন্টি দল হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।’ শ্রীরাম মনে করেন, সুপার টুয়েলভে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয় জয় তুলে নিতে পারলে বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সুপার টুয়েলভের শেষ দুই ম্যাচে ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তা কাজে লাগবে।
সাবেক এই ভারতীয় অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘আমরা দল এবং খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস ঠিক করার চেষ্টা করছি। খেলোয়াড়েরা জানে বিশ্ব ক্রিকেটে তাদের অবস্থান কোথায় এবং কোথায় যেতে চায়। আমার মনে হয় ভিতটা গড়া হয়েছে। দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে পারি, আমরা ভবিষ্যতের জন্য দলটা গড়ার চেষ্টা করছি, যেখানে দক্ষতাসম্পন্ন খেলোয়াড়েরা আছে। এখন আরও কিছু দক্ষতা যোগ করতে পারলে আমার মনে হয় ভবিষ্যতের জন্য আমরা খুব ভালো একটা টি-টোয়েন্টি দল গড়তে পারব।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত অপরাজিত আছে। বাংলাদেশ এক ম্যাচ জিতেছে। এক ম্যাচ বাজেভাবে হেরেছে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৯ রানে জিতে বিশ্বকাপের সুন্দর সূচনা করলেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ১০৪ রানে হার হয়েছে। লজ্জ্বার হার হয়েছে। আর জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে তো পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছে। চমক জাগিয়েছে। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচটিতে হারতে পারত। কিন্তু বৃষ্টিতে শেষপর্যন্ত খেলাই হয়নি। তবে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটারদের। এই ধাক্কায় বাংলাদেশকেও হারাতে পারে জিম্বাবুয়ে।
জিম্বাবুয়ে দলের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার সিকান্দার রাজাতো হুমকিই দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের এখানে কিছু অর্জন করার সুযোগ আছে। আমি সেমিফাইনাল নিয়ে এখনই চিন্তাভাবনা করছি না। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ খেলে এগিয়ে যাচ্ছি। এখন বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিতে নজর দিচ্ছি এবং ম্যাচটি জিততে চাই।’ বোঝাই যাচ্ছে, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর।
তবে বাংলাদেশ দলও কম নয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কি হয়েছে। জিম্বাবুয়েকে এরআগে টি-টোয়েন্টিতে যে ১৯ ম্যাচের মধ্যে ১২বারই হারিয়েছে, এসব নিয়ে ভাবছেনা। শুধু বিশ^কাপে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে কিভাবে জেতা যায়, তা নিয়ে ভাবছে। শ্রীরাম যেমন বলেছেন, ‘আমরা পয়েন্ট তালিকায় চোখ রাখিনি, যা ঘটেছে, তা ঠিক করতে পারব না। শান্ত থাকতে হবে, নিজেদের পরিকল্পনা সম্বন্ধে পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে এবং ম্যাচের দিন শুধু ম্যাচ নিয়েই ভাবতে হবে। টুর্নামেন্টের খেলায় আবেগের কোনো জায়গা নেই। একটা দিন খারাপ যেতেই পারে। কিন্তু তারপরই ঘুরে দাঁড়াতে হয়। আমরা বড় ব্যবধানে জিতি কিংবা হারি, পরের দিন তো এর কোনো দাম নেই। আবারও ঘুম থেকে উঠে অনুশীলন করে (নতুন ম্যাচ) খেলতে হয়। তাই আমাদের দল (আগের ম্যাচে বড় হার) এটা নিয়ে ভাবছে না, সব আগের মতোই আছে।’ যা ঘটেছে, তা পিছনে ফেলে এখন ম্যাচে জয় মিললেই হয়। তাহলে তিন ম্যাচের দুটিতে জয় আসবে। অন্তত আপাতত দুটি জয়তো মিলে যাবে। এরপর ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে কী হবে, তা বোঝা যাবে। বাংলাদেশ জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে সেই চেষ্টাই করবে।