মিথুন আশরাফ – চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ যে ভারতের কাছে হারবে, তা ৫১৩ রানের টার্গেট পড়তেই বোঝা হয়ে গিয়েছিল। তবে লড়াই করেছেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। যেখানে মনে করা হচ্ছিল, উড়ে যাবে। সেখানে ১৮৮ রানের হারটিও খারাপ নয়। বড় ব্যবধানেই হার হয়েছে। তবে অভিষেক টেস্টেই জাকির হাসানের সেঞ্চুরি ও সাকিব আল হাসানের ৮৪ রানের ইনিংসে যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২৪ রান করে হারের ব্যবধান কমানো গেছে তাতেও কম কী?
বাংলাদেশ ওপেনার জাকির হাসান ২২৪ বলে ১৩ চার ও ১ ছক্কায় ১০০ রান করেই আসলেই ব্যাটসম্যানদের সাহসটা বাড়িয়ে দিয়েছেন। না হলে কী আর দ্বিতীয় ইনিংসে এতদুরও যেতে পারে বাংলাদেশ? প্রথম ইনিংসে ভারতের করা ৪০৪ রানের জবাবে ১৫০ রানেই গুটিয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। একজন ব্যাটসম্যানও হাফসেঞ্চুরি করে দেখাতে পারেননি। ফলোঅনে পড়েছিল। ভারত ফলোঅন না করিয়ে আবার ব্যাটিং করে। দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত যখন শুভমান গিলের ১১০ ও চেতশ^র পুজারার অপরাজিত ১০২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে ২৫৮ রান করে ইনিংস ঘোষনা করে দেয়। বাংলাদেশের সামনে ৫১৩ রানের টার্গেট দেয়, তখনই আসলে বাংলাদেশের হার দেখা হয়। কারণ, তখনও যে দুইদিন থাকে। প্রথম ইনিংসেই যেখানে ১৫০ রানের বেশি করা যায়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে আর কতদূর কী করতে পারবেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা? সেই প্রশ্ন সবার মনেই থাকে। তবে না, বাংলাদেশ ব্যাটসম্যান ভারত ক্রিকেটারদের বারোটাই বাজিয়ে দিয়েছিলেন।
চতুর্থদিন শেষে যখন বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ২৭২ রান করে ফেলে, জিততে ২৪১ রান লাগে, হাতে থাকে ৪ উইকেট, তখন কিন্তু ভারতের চিন্তা থাকে। আবার সাকিব (৪০*) ও মেহেদি হাসান মিরাজ (৯*) ব্যাটিংয়ে ছিলেন। দুইজন মিলে ৩৪ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিও গড়ে ফেলেছিলেন। সাকিব তো পরীক্ষিত ক্রিকেটার। বিশে^র সেরা অলরাউন্ডারও। মিরাজ কিন্তু ভারতের জন্য আতঙ্ক হয়ে উঠেন। মিরাজ যে কী ব্যাটিং করতে জানেন, তা তো ওয়ানডে সিরিজেই বুঝেছে ভারত। আর তাই ভয়ও থাকে। তবে খেলা টেস্ট ক্রিকেট। যে কোন সময়, ব্যাটসম্যানের ধৈর্য্য হারানোতে একটি ভুল হলেই, একটি উইকেট গেলেই খেলা ঘুরে যায়। তাই হয়েছে।
পঞ্চম ও শেষ দিনে ৬৮ বলের বেশি টিকতেই পারেনি বাংলাদেশ। সাকিব দ্রুত রান তুলে হাফসেঞ্চুরি করার পর ৮৪ রান করে যখন দলের ৩২০ রানের সময় কুলদ্বীপ যাদবের বলে বোল্ড হয়ে যান, সেখানেই আসলে খেলা শেষ হয়ে যায়। বাংলাদেশের হারের অপেক্ষা থাকে মাত্র। এরআগেই যে দলের ২৮৩ রানের সময় মিরাজও (১৩) সাজঘরে ফিরেছিলেন। সাকিব আউটের পর তো আর ১৪ বল টিকতে পারেন তাইজুল ইসলাম (৪) ও এবাদত হোসেন (০)। আর ৪ রান স্কোরে যোগ করতে পারে। শেষদিনে প্রথম সেশনও টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষদিনে করতে পারে আর ৫২ রান। বাংলাদেশ অলআউট হতেই ভারতও ১৮৮ রানে জিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে।