মিথুন আশরাফ
কম নয়। এক এক করে পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলেছেন আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসি। অবশেষে নিজের পঞ্চম বিশ্বকাপে এসে বিশ্বকাপ শিরোপা জিতলেন মেসি। বিশ্বকাপ ফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে জিতে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতালেন। আর্জেন্টিনার জার্সিতে শেষ বেলায় এসে, শেষ ম্যাচ খেলে বিশ্ব মাতিয়ে দিলেন। বিশ্বকচ্যাম্পিয়ন হলেন। শিরোপা উচিয়ে ধরলেন।
বিশ্বকাপে ২০০৬ সাল থেকে খেলছেন মেসি। ২০০৬ সালের পর ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিশ্বকাপও খেলেছেন। এবার খেললেন ২০২২ সালের বিশ্বকাপও। আর এই বিশ্বকাপ খেলেই আর্জেন্টিনার জার্সিতে নিজের বিশ্বকাপ খেলার ইতি ঘটালেন। নিজেই বলেছেন, বিশ্বকাপের ফাইনালের পর আর আর্জেন্টিনার জার্সিতে বিশ্বকাপ খেলা হবে না। শেষে এসে সর্বোচ্চ সুখের সন্ধান পেলেন মেসি। ফাইনালের আগে পাঁচ বিশ্বকাপে মেসি ১১টি গোল করেছেন। ফাইনালে আরও ২টি গোল করেছেন মেসি।
প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেলেন মেসি। এরআগে ২০১৪ সালের ফাইনালে খেলেও শিরোপা জিততে পারেননি। এবার জিতলেন। বিশ্বের সর্বকালের সেরা এই ফুটবলার আলোচনায় এসেছেন আগেই। পেলে এবং ডিয়েগো ম্যারাডোনার সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে তার। প্রথম দুজন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পেলেও মেসি এতদিন পাননি। তবু ফুটবলার হিসেবে দক্ষতা এবং সাফল্য তাকে নিয়ে এসেছে সর্বকালের সেরার লড়াইয়ে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এবার যেন সর্বকালের সেরা ফুটবলার হওয়ার কাতারেই চলে গেলেন মেসি।
ফাইনালে নেমে রেকর্ডের ঝুলিও ভরেছেন। ২০০৬ সাল থেকে ফুটবল বিশ্বকাপের ২৬টি ম্যাচ খেলে বিশ্বকাপের সব থেকে বেশি ম্যাচ খেলার রেকর্ড গড়েছেন। জার্মানির বিশ্বজয়ী সাবেক অধিনায়ক লোথার ম্যাথিউজকে (২৫টি ম্যাচ) পেছনে ফেলেছেন। মেসি হয়ে গেছেন বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ম্যাচ খেলা ফুটবলার।
সময়ের হিসেবে মেসি সবচেয়ে বেশি সময় খেলার রেকর্ডও গড়েছেন। ফাইনালের আগে ২১৯৪ মিনিট খেলেছিলেন। যা দ্বিতীয় সেরা ছিল। ইতালির সাবেক ফুটবলার পাওলো মালদিনির (২২১৭ মিনিট) চেয়ে ২৪ মিনিট কম খেলেছিলেন। ফাইনালে পুরোটা সময়ই খেললেন। সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন।
ফাইনালের আগে বিশ্বকাপে ২৫টি ম্যাচ খেলে মেসি ১৬টি ম্যাচে জয়ের স্বাদ পান। ফাইনালে জিতে বিশ্বকাপের ১৭তম ম্যাচ জেতার সুবাদে জার্মানির সাবেক ফুটবলার মিরোস্লাভ ক্লোজের রেকর্ড স্পর্শ করেন মেসি।
মেসি একবার বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলারও হয়েছিলেন। ২০১৪ সালের বিশ^কাপে। জিতেছিলেন সোনার বল। এবার কাতারেও সোনার বল জিতে বিশ্বকাপের ৯২ বছরের ইতিহাসে দুবার সোনার বল জেতার রেকর্ড গড়লেন। কেউ এরআগে দুটি বিশ্বকাপে সেরা ফুটবলার হতে পারেননি। মেসি তা হয়ে দেখালেন। এক ফাইনাল ম্যাচ জিতে, সব প্রাপ্তি যেন মেসির মাথায় মুকুট হয়ে ধরা দিল। অবশেষে যে বিশ্বকাপ জিতলেন মেসি। স্বপ্নপূরণও হলো।