স্পোর্টস ডেস্ক – ফুটবল ইতিহাসে লাল ও হলুদ কার্ড সম্পর্কেই সবাই জানে। কিন্তু সাদা কার্ড সম্পর্কে কারোরই জানা ছিল না। এবার তা জানা গেল। ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবার সাদা কার্ডের যে ব্যবহার হয়েছে। তাতে করে ফুটবলে নতুন ইতিহাসই তৈরি হলো।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর দেশ পর্তুগালে এই ঘটনা ঘটে। স্পোর্টিং লিসবন বনাম বেনফিকার নারী দলের ম্যাচ চলছিল। এই ম্যাচে ঘটনাটি ঘটে। ম্যাচের বিরতির সামান্য আগে রেফারি পকেট থেকে হঠাৎই সাদা কার্ড বের করেন। তবে সেই কার্ডের রঙ লাল বা হলুদ নয়, সাদা। ম্যাচের পর্তুগিজ নারী রেফারি জো এই কার্ড দেখান।
শুরুতে মনে করা হয় কোনো ভুল করেছেন। আসলে তা করেননি। তিনি সচেতন ভাবেই সাদা কার্ড বের করেন ফেয়ার প্লের প্রতীক হিসাবে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে তখন ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বেনফিকা। প্রিয় দল বড় ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ায় স্পোর্টিং লিসবনের এক সমর্থক অসুস্থ বোধ করছিলেন গ্যালারিতে। অন্য দর্শকরা আয়োজকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সেটি দেখে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান দু’দলের মেডিক্যাল স্টাফরা। তারা যৌথ ভাবে চিকিৎসা করেন সেই সমর্থকের। পরে চিকিৎসায় অনেকটাই ভাল অনুভব করেন তিনি। দু’দলের মেডিক্যাল স্টাফদের ভূমিকার প্রশংসা করার জন্য রেফারি পকেট থেকে সাদা কার্ড বের করেন ও সেটি মেডিক্যাল স্টাফদের দেখান।
মূলত শান্তির রঙ হিসাবে রেফারি বেছে নিয়েছেন সাদা কার্ড। মাঠের লড়াইয়ের বাইরে পারস্পরিক সৌজন্য, ভ্রাতৃত্বের এই ঘটনাকে অভিবাদন জানান মাঠে উপস্থিত সব দর্শক। এদিকে হলুদ বা লাল কার্ড ব্যবহার করে রেফারিরা সাধারণত ফুটবলার-সহ কোচ বা দলের অন্যদের শাস্তি দেন। সাদা কার্ডের অর্থ সম্পূর্ণ বিপরীত। এই কার্ড ব্যবহার করা হয়েছে খেলোয়াড়ি মানসিকতার প্রশংসা করার জন্য। যা ফুটবলের ইতিহাসে প্রথম কোনো ঘটনা।
এতদিন ফুটবল ম্যাচে হলুদ বা লাল কার্ডের ব্যবহার দেখা গেছে। এই দুই কার্ডের অর্থও সবাই জানে। তবে সাদা কার্ড আগে কখনোই দেখা যায়নি। এমনকি গত কাতার বিশ্বকাপেও এমন ঘটনা ঘটেনি।
পরে রেফারি জো বলেন, ফুটবলের মূল্যবোধ বাড়াতেই তিনি এই কাজ করেছেন। তাঁর দাবি, এর সঙ্গে ফুটবলের নিয়মভঙ্গের কোনও বিষয় নেই। যদিও এমন কিছুর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কেউই। প্রথমে কিছুটা বিস্মিত হন দু’দলের মেডিক্যাল স্টাফরা। তারা বুঝতে পারছিলেন না কী অন্যায় করেছেন। কেননা ফুটবলে কার্ড মানেই শাস্তি। এত দিন ধরে সেই ধারণাই তৈরি হয়েছে সকলের মধ্যে। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, ভালো করতে গিয়ে রেফারির তোপে পড়েছেন মেডিক্যাল স্টাফরা। রেফারি নিশ্চয় হলুদ বা লাল কার্ড দেখাতে চেয়েছিলেন। পরে বিষয়টি বোঝার পর অনেকে নারী রেফারির প্রশংসা করেছেন।