Search
Close this search box.

আশা জাগিয়েও মালানে ডুবল বাংলাদেশ

আশা জাগিয়েও মালানে ডুবল বাংলাদেশ

মিথুন আশরাফ

জয়ের আশা জেগেছিল। কিন্তু ডেভিড মালান এমনই দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেন, হেরে গেল বাংলাদেশ। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে মালানের অপরাজিত ১১৪ রানে ডুবল তামিমবাহিনী। ৩ উইকেটে হারল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ল।

মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াামে টস জিতে আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। ৪৭.২ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে ২০৯ রান করে। ২০০৩ সালের পর বাংলাদেশের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এত কম রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত (৫৮) শুধু হাফসেঞ্চুরি করতে পারেন। ওয়ানডেতে প্রথম হাফসেঞ্চুরি করেন। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রান। অধিনায়ক তামিম ইকবাল করেন ২৩ রান। বল হাতে জোফরা আর্চার, মার্ক উড, মঈন আলী ও আদিল রশিদ ২টি করে উইকেট নেন।

জবাব দিতে নেমে ৪৮.৪ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২১২ রান করে জিতে ইংল্যান্ড। মালানের সেঞ্চুরির সঙ্গে উইল জেকস ২৬, মঈন আলী ১৪, আদিল রশিদ অপরাজিত ১৭ রান করেন। মালান ১৪৫ বলে ৮ চার ও ৪ ছক্কায় অপরাজিত ১১৪ রান করেন। ইংল্যান্ড করল ২১২ রান। মালান একাই করলেন ১১৪ রান। তাইজুল ইসলাম ৩টি ও মেহেদি হাসান মিরাজ ২টি উইকেট শিকার করেন।

সাকিব তো প্রথম ওভারেই ওপেনার জেসন রয়কে সাজঘরের পথ ধরান। সাকিবের ঘুর্নি বলটিতে শট নিতে গিয়ে মিড অফে ক্যাচ দেন। ক্যাচটি ধরেন আবার তামিম। সাকিব ও তামিমের দ্বন্দ্ব নিয়ে খুব আলোচনা। সাকিবের বলে ক্যাচ ধরে, দৌড়ে গিয়ে সাকিবের সঙ্গে তামিমের হাত মেলানোয় যেন দ্বন্দ্ব নিয়ে আলোচনার অবসানও ঘটে।
ফিল সল্ট ও ডেভিড মালান মিলে যখনই একটু থিতু হয়েছেন, তাইজুল এসে স্পিন ঘুর্নিতে সল্টকে আউট করে দেন। ৪ রানে প্রথম ও ৩৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড চাপে পড়ে যায়। তিন স্পিনার সাকিব, তাইজুল ও মেহেদি হাসান মিরাজের সঙ্গে এক পেসার তাসকিন আহমেদ মহা চাপে রাখেন ইংল্যান্ড ব্যাটারদের। তাইজুল তো জেমস ভিঞ্চকেও আউট করে দেন।

ইংল্যান্ডের যখন ৬৫ রান হয়, তখন তাসকিন বোলিং করতে এসে জস বাটলারকে আউট করে দেন। স্লিপে ক্যাচ দিয়ে বাটলার (৯) সাজঘরে ফিরেন। ইংল্যান্ডের গুরুত্বপুর্ন উইকেট শিকার করেন বাটলার। ইংলিশরা এবার মহা চাপে পড়ে যায়। ২০ ওভার পর মুস্তাফিজুর রহমান নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই উইল জেকসকে আউট করার সুযোগ হাতছাড়া করেন। ক্যাচ ধরতে পারেননি। যদিও কঠিন ছিল ক্যাচ।

এক এক করে উইকেট পড়লেও মালান ঠিকই উইকেট আকড়ে থাকেন। পঞ্চম উইকেটে জেকসকে নিয়ে তো ৩৮ রানের জুটিও গড়ে ফেলেন। ৬৫ রানে ৪ উইকেট পড়ার পর তো শতরানেও চলে যায় ইংল্যান্ড। দলের যখন ১০৩ রান হয়, তখন জেকসকে (২৬) আউট করে দেন মিরাজ। বাংলাদেশের জয়ের আশা তৈরী হতে থাকে। কিন্তু এক মালানকেই আউট করা যাচ্ছিল না। ৯২ বলে হাফসেঞ্চুরিও করে ফেলেন মালান।

মালান ও মঈন আলী বড় জুটি গড়ার দিকেই যাচ্ছিল। ষষ্ঠ উইকেটে যখন ৩৮ রানের জুটি হয়, তখন দলের ১৪১ রানে সময় মঈনকে (১৪) আউট করে দেন মিরাজ। ইংল্যান্ডের ১৪৭ রানের সময় ক্রিস ওকস আউট হতে পারতেন, যদি মুস্তাফিজের করা বলে স্লিপে ক্যাচ ধরতে পারতেন মিরাজ। ওকস আউট হলেন। দলের ১৬১ রানের সময়। তাইজুলের বলে তামিম ক্যাচ ধরলেন।

মালানকে আউট করতে পারলেই জয়ের সুযোগ ধরা দিবে কিংবা হাতে থাকা ৩ উইকেট দ্রুত তুলে নেওয়া গেলে। তা হলো না। উল্টো মালান ১৩৪ বলে সেঞ্চুরিও হাকান। উপমহাদেশের কোন দলের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি হাকান। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে চতুর্থ সেঞ্চুরি হাকান। শেষে আদিল রশিদকে নিয়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মালান। বাংলাদেশের জয়ের স্বপ্ন চূড়মার করে দেন।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা ভালোই হয়। দুই ওপেনার তামিম ও লিটন কুমার দাস মিলে ৩৩ রানের জুটি গড়েন। এরপর তৃতীয় উইকেটে শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলেও ভালোই এগিয়ে যান। ৪৪ রানের জুটি গড়েন। পঞ্চম উইকেটে গিয়ে শান্ত ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তো ৫০ রানের উপরে জুটি গড়েন। ৫৩ রানের জুটিই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেয়। শেষে গিয়ে নবম উইকেটে তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম মিলে ২৬ রানের জুটি গড়াতে বাংলাদেশ ২০০ রান অতিক্রম করতে পারে। না হলে লিটন (৭), মুশফিক (১৬), সাকিব আল হাসান (৮), আফিফ হোসেন ধ্রুব (৯), মেহেদি হাসান মিরাজ (৭) যে ব্যাটিং করেছেন, তাতে ২০০ রানও করতে পারত না। ১৮২ রানেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। সেখান থেকে তাসকিন (১৪) ও তাইজুল (১০) মিলে দলকে ২০৯ রানে নিয়ে যান। যে রান হয় আর উইকেটে যেভাবে ইংলিশ দুই স্পিনার মঈন ও আদিলের দাপট দেখা গেছে, তাতে বাংলাদেশের এই স্কোরেই জয়ের সম্ভাবনা থাকে। সাকিব, মিরাজ, তাইজুলরা সেই আশা জাগানও। কিন্তু এক মালানেই ডুবল বাংলাদেশ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ