হারতে হারতে জিতে যাওয়া-এক দুই করে এ বিশ্বকাপে অন্তত পাঁচবার এমন ‘ফাইনাল ওভার থ্রিলার’ দেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। শেষের সেই জটিল সমীকরণ আজ অ্যান্টিগায় মিলিয়ে দিয়েছে আরেকবার। শেষ চারে টিকে থাকার লড়াইয়ে প্রোটিয়ারা বিদায় করেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। ৩ উইকেটের জয়ে গ্রুপসেরা হয়ে পাকা করেছে সেমিফাইনালও।
সোমবার (২৪ জুন) নর্দ সাউন্ডের স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে নামার আগে স্বস্তিতে ছিলেন না প্রোটিয়ারা। টেবিলের হিসাবের মারপ্যাঁচ এমন ছিল যে, দুই জয় নিয়েও বাদ পড়ে যেতে পারত। রোববার যুক্তরাষ্ট্রকে উড়িয়ে গ্রুপ টু থেকে সেমি নিশ্চিত করে ইংল্যান্ড। আজ ক্যারিবীয়-প্রোটিয়া লড়াইয়ে যে জিতত তার হাতেই আসত সেমির টিকিট। সে লড়াইয়ে আরেকবার ভাগ্যের সহায়তা পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সব মিলিয়ে ভাগ্য বলা একেবারেই ঠিক না। কেননা অ্যান্টিগায় প্রোটিয়া বোলাররা দাপট দেখিয়েছিলেন। আর তাদের জয়ের অন্যতম নায়ক তাবরেজ শামসি। তার দাপুটে বোলিংয়ের সামনে প্রথমে ব্যাট করেও সুবিধা করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাঁহাতি স্পিনার একাই ৩ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের লাগাম টানেন।
মারকাটারি সংস্করণের রাজা খ্যাত সব ক্যারিবীয় ব্যাটারকে দমিয়ে রেখেছেন অন্য বোলাররাও। দু’জন ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোনও ব্যাটারই চেনা ২২ গজে রান পেলেন না গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। রোস্টন চেজের ফিফটি আর কাইল মায়ার্সের ৩৫ রানে ভর করে ১৩৫ রান অবধি যেতে পারে ক্যারিবীয়রা।
জবাবে শুরুতেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মার্করামের দল। এরপর আবার বৃষ্টির বাগড়া। বেরসিক বৃষ্টি ম্যাচটা গিলে না নিলেও কার্টেল ওভারে গড়ায় খেলা।
আখেরে দক্ষিণ আফ্রিকার তাতে ভালোই হয়। ১৭ ওভারে ১২৩ রানে আসে লক্ষ্য। সে লক্ষ্য পেরোতে অবশ্য কাঠখড় কম পোহাতে হয়নি। ব্যাটিংয়ে ৫২ রান করা রোস্টন চেজ বোলিংয়েও প্রোটিয়াদের বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ১২ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট। বাকি বোলারদের মাঝে আন্দ্রে রাসেলও ছিলেন মূর্তিমান আতঙ্ক।
শেষ পর্যন্ত সমীকরণ ১২ বলে ১৩ রানে এসে ঠেকে। সহজ মনে হলেও বেশ ভুগেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। মার্কো জানসেনের চওড়া ব্যাট অবশ্য শেষতক ক্যারিবীয়দের সফল হতে দেননি। তার ১৪ বলে ২২ রানের ইনিংসের কাছেই মূলত হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাটি হয় শেষ চারের স্বপ্নও। উল্টো দোলাচলে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা অপরাজিত থাকার রেকর্ড ধরে রেখে সেমি নিশ্চিত করে।