নিজস্ব প্রতিবেদক:- জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমি মিলনায়তনে আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্স ইনস্টিটিউট, ভারতের উদ্যাগে অনুষ্ঠিত হলো ‘শতবর্ষের পথে মৈমনসিংহ গীতিকা‘র দীনেশ –রবীন্দ্র চিঠিপত্র সম্মাননা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার, সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক কবি নুরুল হুদা, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, ড. দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান বড়ুয়া এবং নজরুল গবেষক এ এফ এম হায়াতুল্লাহকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। দীনেশচন্দ্রের প্রপৌত্রী ও আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্স ইনস্টিটিউট, ভারত-এর সাধারণ সম্পাদক দেবকন্যা সেন সম্মাননা হস্তান্তর করেন।
এ সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, দীনেশচন্দ্র সেন বাংলার প্রাচীন লোক সাহিত্যকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরে বাঙালিকে গৌরবান্বিত করেছেন। তিনি বাংলার সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ইতিহাস বিশ্ব সাহিত্যে স্থান করে দিয়ে বাঙালির মেধা, সৃজনশীলতা ও শৌয্য-বীর্যকে চিনিয়েছেন । আমরা এই দেশের মানুষ দীনেশচন্দ্রের উত্তরাধিকারী হিসেবে ধন্য। তিনি বলেন, বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের মাধ্যমে মৈমনসিংহ গীতিকা পুণ:প্রকাশ করে আমরা বাঙালির অমূল্য সম্পদ রক্ষা করেছি। দীনেশচন্দ্রের পূর্ববাংলা গীতিকা সংগ্রহ করেছি। আগামী বই মেলার আগে পূর্ববাংলা গীতিকার বাংলাদেশ সংস্করণ প্রকাশ করা হবে বলে দৃঢ় প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন মন্ত্রী।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সম্মাননা গ্রহণের পর তার প্রতিক্রিয়ায় দীনেশচন্দ্র সম্মাননাকে বাঙালির সম্মাননা আখ্যায়িত করে বলেন, ‘‘আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন রিসার্স ইনস্টিটিউট, ভারত-আমাকে সম্মাননা প্রদান করে ধন্য করেছে। আপনাদের দেওয়া এই সম্মাননা আমাদের তো বটেই বাংলাদেশকে সম্মানিত করেছে। গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে এই সম্মাননা আমি গ্রহণ করছি। এই সম্মাননার প্রদানের জন্য আমার সরকার এবং ব্যক্তিগতভাবে আমার পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ।” বাংলা ভাষাকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে রূপান্তরের উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাংলার লোকায়ত সাহিত্য, পুঁথি নিয়ে যে গবেষণার রাস্তা তিনি দেখিয়ে গিয়েছিলেন, তা আজও বহু গবেষককে প্রেরণা যোগায়। গ্রামের পিছিয়ে থাকা নিরক্ষর মানুষদের ভেতরেও সাহিত্যের যে ধারা বয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে বাংলার মূল ধারার সাহিত্যের পরিচয় ঘটান তিনি। এর ফলে বাংলার একটা বড়ো সাহিত্য ধারা আমাদের সামনে চলে এল । বৃহত্তর ময়মনসিংহ সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি জনাব মোস্তাফা জব্বার গারো পাহাড়ের পাদদেশে দুর্গম হাওর অঞ্চলের প্রাচীন লোকগাঁথা সংগ্রহে দীনেশচন্দ্র সেনের অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলা ভাষার ইতিহাস, সাহিত্যের একটা অচেনা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ দিক বাঙালিকে চিনিয়েছেন দীনেশচন্দ্র সেন। দুর্গম হাওর এলাকা থেকে দীনেশ সেন যে কঠোর পরিশ্রম করে পুঁথি-পালাগুলো সংগ্রহ করেন মন্ত্রী তার জন্য তার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
উক্ত অনুষ্ঠানে জনাব নোমান ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাভাষা উদ্ভাবনে অবদানের জন্য বিজয় সফটওয়্যারের জনক জনাব মোস্তাফা জব্বারকে ‘বিজয় বন্ধু’ উপাধীতে আখ্যায়িত করেন। কবি নূরূল হুদাসহ মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং হল ভর্তি দর্শকরা করতালি দিয়ে বিজয় বন্ধু জনাব মোস্তাফা জব্বারকে স্বাগত জানান। মন্ত্রী এসময় সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।