স্টাফ রিপোর্টার- চট্টগ্রামে ৪১৮ জন শিক্ষককে সম্মাননা জানিয়েছে এটুআই ও গ্রামীণফোন। ‘শিক্ষক সম্মাননা ২০২২- ব্লেন্ডেড শিক্ষায় ডিজিটাল অ্যাক্সেস ও শিক্ষকের সক্ষমতা’ শীর্ষক সম্মাননা পুরস্কারের আয়োজন করে যৌথ ভাবে ‘চট্টগ্রাম বিভাগীয় আইসিটিফোরই ও গ্রামীণফোন-এটুআই । বৈশ্বিক মহামারির সময় ডিজিটাল মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখায় অবদান এর জন্যে অ্যাম্বাসেডর শিক্ষকদের এই স্বাকৃতি দেয়া হয়েছে।
কোভিড-১৯ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় সারা দেশের শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ, স্কুল, বন্ধুবান্ধব এবং এমনকি আনুষ্ঠানিক শিক্ষা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছিলো। শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। অনলাইন ক্লাস ধীরে ধীরে বিকল্প হয়ে উঠে সেই সাথে শিক্ষকরাও বিভিন্ন বিকল্প পদ্ধতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করার জন্য আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন।
দেশের শিক্ষকদের অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমসহ তাদের প্রযুক্তির ব্যবহার ও ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করতে নানাবিধ উদ্যোগ নিয়ে এটুআই ও গ্রামীণফোন যৌথভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘শিক্ষক বাতায়ন’ অন্যতম। এ উদ্যোগগুলোর ফলে ইতোমধ্যে শহর ও গ্রামাঞ্চলের শিক্ষকদের পাঠদান পদ্ধতিতে প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য কমে আসছে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষকরা অনলাইন স্কুল চালু করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। শিক্ষকদের এই নেতৃত্বের জন্য ‘শিক্ষক সম্মাননা ২০২২: ব্লেন্ডেড শিক্ষায় ডিজিটাল অ্যাক্সেস ও শিক্ষকের সক্ষমতা’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিভাগের ৪১৮ জন অ্যাম্বাসেডর শিক্ষককে সম্মাননা জানানো হয়।
এ নিয়ে গ্রামীণফোনের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) ড. আসিফ নাইমুর রশিদ বলেন, “বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের কারণে, আগামী দিনে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য অনেকেই তৈরি হবে বলে আমি বিশ্বাস করি; একইসাথে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের লক্ষ্য বাস্তবায়নে এটুআই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং তরুণদের ক্ষমতায়ন ও স্ব-নির্ভর জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতি তৈরিতে এ পথচলার গর্বিত অংশীদার হিসেবে রয়েছে গ্রামীণফোন। সঙ্কট থেকেই উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা দেখা যায়, এ উদ্যোগটিও এর ব্যতিক্রম নয়। এ রকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কানেক্টিভিটি বিকল্প পন্থা বের করে সল্যুশন প্রদানের মাধ্যমে আমাদের সঙ্কটকালীন পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে সাহায্য করেছে।”
কোভিড-১৯ মহামারি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব্লেন্ডেড শিক্ষা কাঠামো গঠন করা হয়। এটি এমন একটি মডেল; যা জ্ঞান-ভিত্তিক সমাজ, দক্ষতাভিত্তিক শিক্ষার্থী এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মতো ভবিষ্যতের পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে বাংলাদেশকে একটি স্ব-নির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশ রুপান্তর ও ২০৪১ সালে একটি উদ্ভাবনী ও স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত শিক্ষক বাতায়নে প্রায় ৬ লাখ শিক্ষক নিবন্ধন করেছেন, যাদের মধ্যে প্রায় ২৫০০ জন শিক্ষককে তাদের অসাধারণ উপস্থাপনা, উদ্ভাবনী কার্যক্রম ও শিক্ষা বিষয়ক ডিজিটাল কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট এর জন্য ‘আইসিটিফোরই অ্যাম্বাসেডর’ এর মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।
ইউএনডিপি বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক ডঃ দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং গ্রামীণফোনের চিফ বিজনেস অফিসার ডঃ আসিফ নাইমুর রশীদ যৌথভাবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ৪১৮ জন শিক্ষকের হাতে ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন।
চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশনাল হলে আয়াজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক মোঃ শাহেদুল খবির চৌধুরী। এছাড়াও আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ডাঃ উত্তম কুমার দাস, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড চট্টগ্রামের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর হোসাইন আহমেদ আরিফ ইলাহী, বিভাগীয় উপপরিচালক (প্রাথমিক শিক্ষা) চট্টগ্রাম বিভাগ ড. মো: শফিকুল ইসলাম, প্রধান শিক্ষা কর্মর্কতা (উপসচিব) লুৎফুন নাহার এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনসহ সম্মানিত অতিথিবৃন্দ।