স্টাফ রিপোর্টার \ রাজধানীতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভুক্তভোগী ও প্রকৃত অপরাধী শীর্ষক ভিকটিমদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে । ঢাকায় জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানি এদেশীয় দোসরদের গাত্র-দাহ হয়ে উঠেছে । তারা সাম্প্রদায়িক সম্পৃতি বিনষ্টসহ দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। মন্ত্রী অপশক্তির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রতিটি মানুষের সচেতনতার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, দেশ যত বেশি ডিজিটাল হবে ডিজিটাল অপরাধ তত বেশি বাড়বে। যে কোন অপরাধ প্রতিরোধে আইনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল অপরাধ নিয়ন্ত্রণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অপরিহার্য। তিনি আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে ডিজিটাল অপরাধ প্রতিরোধের বিকল্প নেই উল্লেখ করে বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপপ্রয়োগ রোধে সরকার বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করে স্বার্থন্বেষী মহল কোন কোন ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে ফায়দা লুটার অপচেষ্টা করে আসছে। অতীতে এ ধরনের অনেক ঘটনা এ দেশে ঘটেছে। একাত্তরে আমরা স্বাধীন হয়েছি বটে কিন্তু এখনো মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা বিরোধীদের বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ চলমান। মন্ত্রী, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আর কোনো মানুষ যেন হেনস্থা না হয় সেজন্য দেশের আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল অপরাধ আদালতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতৃত্বে আটটি সাইবার ট্রাইব্যুনাল আইনজীবী প্যানেল তৈরির পরামর্শ দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র সমাজ, আইন বিরোধী যে কোনো কর্মকান্ড হলে এবং আমরা যদি তার রিপোর্ট পাই তাবে তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার সক্ষমতা আমরা ইতোমধ্যে অর্জন করেছি বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমরা কোনো ভাবেই আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইতিহাস-ঐতিহ্য, ভাষা-সাহিত্য ও সংস্কুতি দুর্বৃত্তদের হাতে যেতে দিব না। আমাদের সংগ্রাম চলবেই এই সংগ্রামের সূচনা করতে হবে সামাজিক ভিত্তিতে। আমাদের সকলকে একযোগে এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে তবেই আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারব।’
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি সাংবাদিক শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী মানবাধিকার নেত্রী আরমা দত্ত এমপি, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বিচারপতি (অব) শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তাপস বল, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি কাজল দেবনাথ, নির্মূল কমিটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আইন সম্পাদক এডভোকেট নাসির মিঞা প্রমূখ।