মিথুন আশরাফ : জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ১৭ রানে হার হয়েছে। সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। বোলারদের ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে হার হয়েছে। আজ বিকেল ৫ টায় হারারে স্পোর্টস ক্লাবে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ম্যাচটিতে যদি হারে বাংলাদেশ, তাহলে সিরিজ হার হয়ে যাবে। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ হার হবে। আর যদি জিতে তাহলে সিরিজে আসবে ১-১ সমতা। বাংলাদেশ আজ সমতা আনতে পারবে? না সিরিজ হার হয়ে যাবে?
প্রথমবার টি-টোয়েন্টি দলের নেতৃত্ব পেয়েই হারের স্বাদ পান নুরুল হাসান সোহান। তাও আবার জিম্বাবুয়ের কাছে হার দিয়ে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব ক্যারিয়ার শুরু হয়। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ সোহান। তবে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতেই ঘুরে দাড়ানোর আশা করেছেন। সোহান বলেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম যে আমরা এই রান তাড়া করে জিততে পারব। পিচ খুব ভালো ছিল। তবে আশা করছি, শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’ সাথে যোগ করেন, ‘আগামী ম্যাচগুলোতে কিছু ওভারে আমাদের উন্নতি করতে হবে। ১০-১৫ রান কম হলে আমাদের জন্য ইতিবাচক একটি ম্যাচ হতো।’
প্রথম টি-টোয়েন্টি আসলে বাংলাদেশ বোলাররাই দলকে ডুবিয়েছেন। জিম্বাবুয়ে ২০৫ রান করে ফেলে। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর করে। তা সম্ভব হয় বাংলাদেশ বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিংয়ে। যেন দলটি জিম্বাবুয়ে বলে হাল ছেড়েই বোলিং করেছেন বাংলাদেশ বোলাররা।
মুস্তাফিজুর রহমান তো ২ উইকেট শিকার করলেও ৪ ওভারে সবচেয়ে বেশি ৫০ রান দিয়েছেন। ওভার প্রতি প্রায় ১৩ রান করে দিয়েছেন। এরপর শরিফুল ইসলাম ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়েছেন। তাসকিন আহমেদও কম নন, ৪২ রান দিয়েছেন। তিন পেসারই বেশি রান দিয়ে ফেলেছেন। যাদের নিয়ে বেশি ভরসা করা হয়েছে, তারাই ডুবিয়েছেন। এরপর ব্যাটসম্যানরাও নিজেদের সেরাটা দিতে পারেননি।
যিনি ব্যাট হাতে উইকেটে সেট হয়েছেন, তিনিই উইকেট ছুড়ে দিয়ে এসেছেন। জিম্বাবুয়ের যেখানে ওয়েসলি মাধেভেরে (৬৭) ও সিকান্দার রাজা (৬৫*) হাফসেঞ্চুরি করেছেন, সেখানে বাংলাদেশের একজন ব্যাটসম্যানও হাফসেঞ্চুরির দেখা পাননি। সবচেয়ে বেশি অপরাজিত ৪২ রান করতে পেরেছেন অধিনায়ক সোহান। নাজমুল হোসেন শান্ত (৩৭), লিটন কুমার দাস (৩২), এনামুল হক বিজয় (২৬) সেট হয়েও আউট হয়ে গেছেন।
একটা দলের সামনে যখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২০৬ রানের টার্গেট দাড় হয়, তা করা অনেক কঠিনই হয়ে পড়ে। দল যতই শক্তিশালী হোক না কেন। তাই সোহানও বোলারদের ব্যর্থতাকেই সামনে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা ভালো ম্যাচ ছিল। আমি মনে করি শেষ পাঁচ থেকে ছয় ওভারে ভালো বল করতে পারিনি। তারা সত্যিই ভালো ব্যাট করেছে। শেষ পাঁচ থেকে ছয় ওভারের বোলিংয়ে উন্নতি করতে হবে। তবে আমি কোনো অজুহাত দেখাতে চাই না। ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিং সবই আমাদের বিষয় এবং আমাদের উন্নতি করতে হবে। প্রত্যেকে তাদের সেরা চেষ্টা করেছিল।’
জিম্বাবুয়ে শেষ ৫ ওভারে ৭৭ রান স্কোরে যোগ করে। ১০ ওভারে ৭৪ রানে ছিল। সেখান থেকে ১৩তম ওভারে গিয়ে ১০০ রান স্কোরে জমা করে জিম্বাবুয়ে। শেষ ১০ ওভারে ১৩১ রান করে তারা। ১৫তম ওভারেও ১২৮ রানে থাকে জিম্বাবুয়ে। ১৭তম ওভারে গিয়ে ১৫০ রান স্কোরে জমা করে ফেলে জিম্বাবুয়ে। শেষ ৫ ওভারে ৭৭ রান করে। তাতেই বোঝা যাচ্ছে, শেষে গিয়ে বাংলাদেশ বোলাররা কতটা ছন্নছাড়া হয়ে পড়ে।
এই ছন্নছাড়া বোলিং যদি আজও বজায় থাকে, তাহলে সিরিজ জেতার স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। উল্টো সিরিজ হার হয়ে যাবে। জিম্বাবুয়ে সফরে কখনোই বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারাতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। এবার কী তাহলে প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হার হয়ে যাবে? নাকি আজ সমতায় ফিরবে বাংলাদেশ?