স্টাফ রিপোর্টার : রাশিয়ান মুদ্রা রুবলে নয়, ডলারে রাশিয়া থেকে গম কিনবে বাংলাদেশ। ৫ লাখ টন গম কিনবে। বাংলাদেশ ও রাশিয়ার সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এমন খবরই দিয়েছে।
রাশিয়া থেকে ৫ লাখ টন গম আমদানি করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা পাবার পর থেকে রাশিয়া রুবলে রপ্তানির উপর জোড় দিলেও বাংলাদেশ ডলারে গম আমদানি করবে। প্রতি টন ৪৩০ ডলার দরে রাশিয়া থেকে গম আমদানি করবে বাংলাদেশ। মূলত দেশীয় বাজারের চাহিদা মেটাতেই রাশিয়া থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।
খবরে জানানো হয়, ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্বে গম আমদানিতে সংকটে পড়ে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে গমের সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী দেশ ছিল ভারত। গত মে মাসে ভারত রফতানি বন্ধ করে দেয়। তাতে সংকট আরো বেড়ে যায়। তাতে করে রাশিয়া থেকে গম আমদানির পথে হেটেছে বাংলাদেশ।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে ক্রেমলিনের অভিযান শুরুর পর রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর ব্যাংকিং লেনদেনসহ বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ফলে ঋণপত্র খোলা, পণ্যের চালানের নিশ্চয়তা পাওয়ার মতো বিষয়গুলো ঝুলে ছিল। এর পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞার কারণে লেনদেনের ধরন নিয়েও অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। কৃষ্ণ সাগরে জাহাজ চলাচল এখনো নিরাপদ ছিল না। তবে সম্প্রতি রাশিয়ার কৃষি ও খাদ্যপণ্য আমদানি থেকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়।
কৃষ্ণ সাগর দিয়ে রপ্তানি হওয়া গমের বড় আমদানিকারক বাংলাদেশ। কিন্তু ফেব্রুয়ারি মাসে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গম আমদানি বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশের। ২০২১ সালে ৫৪ লাখ টন গম আমদানি করা হয়েছিল দেশে। এরমধ্যে ২৪ শতাংশ এসেছিল ভারত থেকে, ২১ শতাংশ রাশিয়া থেকে এবং ১৭ শতাংশ ইউক্রেন থেকে।
বাংলাদেশের এক সরকারি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে গম আমদানির ব্যাপারে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই হবে। এরপর জানুয়ারির মধ্যেই ধারাবাহিকভাবে চালান শুরু হবে। দাম পরিশোধের বিষয়ে আরেক কর্মকর্তা জানান, রুবলে নয় মার্কিন ডলারেই গমের দাম পরিশোধ করবে বাংলাদেশ। দুজন কর্মকর্তাই নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
বাংলাদেশ রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য ও সার কিনছে বলে রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য তিনি দেননি। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বের ২৪টি ব্যাংকের মাধ্যমে ডলার দিয়ে রাশিয়ার কাছ থেকে খাদ্যশস্য ও সার আমদানি করতে পারব, এ ধরনের আমদানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।
জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে গত তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন মজুদ ছিল। ভারত রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার পর বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে মজুদ বাড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে কিছু দরপত্র বাতিল করতে হয়।