আন্তর্জাতিক ডেস্ক – বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মনে করছে, তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা আট গুণ বাড়তে পারে। ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা এরইমধ্যে ৫০০০ ছাড়িয়ে গেছে। এই সংখ্যা আরও অনেকগুন বাড়তে পারে।
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার এই শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, তুরস্কের নুরদাগি এলাকা থেকে ২৩ কিলোমিটার পূর্বে এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। পরে আরও কয়েকবার শক্তিশালী কম্পন (আফটার শক) অনুভূত হয়। খবর- বিবিসি।
উদ্ধারকারীরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে প্রচুর মানুষকে খুঁজে পাচ্ছে। ডব্লিউএইচওর সিনিয়র ইমার্জেন্সি অফিসার ক্যাথরিন স্মলউড বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, আমরা সব সময় ভূমিকম্পের ক্ষেত্রে একই জিনিস দেখতে পাই। দুর্ভাগ্যবশত শুরুর দিকে হতাহতের সংখ্যা যা থাকে, পরবর্তী সপ্তাহে বেশ উল্লেখযোগ্যভাবে তা বেড়ে যায়। স্মলউড বলেন, তুষারপাত ও তীব্র ঠান্ডার মধ্যে অনেক মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন।
তুরস্ক ও সিরিয়া – দুটি দেশেই হাজার হাজার ভবন ধসে পড়েছে। বেশ কয়েকটি ভিডিওতে বিভিন্ন ভবন ধ্বংসের চিত্র দেখা যায়। কোনো কোনো ১২তলা উচ্চতার ভবন এখন মাটিতে মিশে গেছে। রাস্তাগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং যত দূর চোখ দেখা যায়, সেখানে ধ্বংসস্তূপের বিশাল পাহাড়। এ ঘটনায় তুরস্কে সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। হতাহতদের স্মরণে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে এক মিনিটের নিরবতা পালন করা হয়েছে। শোক জানিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ভূমিকম্পে অনেক বাংলাদেশি নাগরিকের হতাহতের আশঙ্কা করছে তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাস। গোলাম সাঈদ রিংকু নামের এক বাংলাদেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে। প্রথম আঘাত হানার পর দ্বিতীয় শক্তিশালী কম্পন আরও উত্তরে আঘাত হানে। এখন চলছে উদ্ধারকাজ। উদ্ধারকারীরা প্রচণ্ড শীত ও তুষারপাতের মধ্যে ধ্বংসস্তূপের পাহাড়ের মধ্য থেকে জীবিতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। তুরস্কের এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্বের নানা দেশ। বিশেষজ্ঞ দল ও নানা সরঞ্জাম দিয়ে উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তার চেষ্টা করছে নানা দেশ।