স্টাফ রিপোর্টার – সমাজ ও রাষ্ট্রে সম্মানজনক অবস্থান তৈরিতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরে নারীদের মানুষ হিসেবে স্বীকৃতি চেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ‘ডিজিটাল সাংবাদিকতা নারীর চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘দেশের দুর্যোগ, দুর্বিপাকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে নারীরা। আমাদের দেশে মেয়েদের সামনে আসা এবং এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি সহজ ছিলো না। দেশের প্রান্তিক অঞ্চলে নারী শিক্ষায় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অবদান অনস্বীকার্য। নারী ক্ষমতায়নে সরকারের উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়ার জন্য সবার প্রতি আহবান জানিয়ে সংসদ উপনেতা আরও বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবসে এটাই চাইব যে নারী সে মানুষ; তাই মানুষ হিসেবেই স্বীকৃতি পাক। আর অন্য কিছু চাচ্ছি না।’
মতিয়া চৌধুরী আরও বলেন, নারীদের অধিকার নিশ্চিত এবং সমাজ ও রাষ্ট্রে গুরুত্বপূর্ণ পদে মহিলাদের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনাই কিন্তু বেবি ডে-কেয়ার সেন্টার প্রথম চালু করেছেন। এত বড় একটা ডিগ্রি নিয়ে যখন মেয়েরা চাকরি করতে আসে তখন তার মনকে দুই ভাগ করে দেওয়া হয়। এক তো সে বাচ্চাটেকে বাড়িতে রেখে আসছে অন্যদিকে অফিসের কাজে ভালো করে মন দিতে পারে না। শেখ হাসিনা স্লোগান দিয়ে বলেন না যে পাশে আছি। কিন্তু তিনি পাশেও থাকেন এবং কাছেও থাকেন। মায়ের মমতা দিয়ে মাথায়ও হাত রাখেন এবং পিঠেও হাত রাখেন। এটাই হচ্ছে আজকের সরকার প্রধানের নীতি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকতা এখন আর হাতে কলমে নেই, ডিজিটালে প্রবেশ করেছে। ফলে যে কেউ চাইলেই তাদের তোলা ছবি বা খবর গণমাধ্যমে পাঠাতে পারে। অনেক নারী প্রযুক্তি ব্যবহার করতে জানলেও সামান্য কিছু নারী এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন। নারীদের প্রতি সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর দরকার। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী। ডিআরইউর নারী বিষয়ক সম্পাদক মরিয়ম মনি সেঁজুতির সঞ্চালনা সভায় ফ্রেন্ডশিপ এনজিওর ফাউন্ডার ও এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রুনা খান এবং আরএফএস এডভাইজরি ও বিডব্লিউসিসিআইর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক নাজমা জামালউদ্দিনসহ বিশিষ্টজনেরা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি মুরসালিন নোমানীর নেতৃত্বে ডিআরইউর সামনে থেকে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিতে ডিআরইউর এর সদস্য এবং ফ্রেন্ডশিপ এনজিওর সদস্যরা অংশ নেন।
অন্যদিকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিকেলে আলোচনা সভার আয়োজন করে জাতীয় প্রেসক্লাব। সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত। অনুষ্ঠানে ‘ডিজিটাল : ইনোভেশন এণ্ড টেকনোলজি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ বিজনেস অব টেকনোলজির সহযোগী অধ্যাপক তানভীর হাসান জোহা।
আলোচনায় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সরকার আগামীতে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছে। সে প্রচেষ্টায় নারী পুরুষ সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। সে জন্য প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও ডিজিটাল মাধ্যমে নারীদের কার্যকরী অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। ডিজিটাল খাতে নারীদের পেছনে রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণ সম্ভব নয়।
সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বাংলাদেশ একটি ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে এগিয়ে যাচ্ছে। এ অগ্রযাত্রাকে আরো এগিয়ে নিতে হলে ডিজিটাল জগতে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার কোন বিকল্প নেই।
প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে সভাটি পরিচালনা করেন সেমিনার, মিট দ্য প্রেস ও আন্তর্জাতিক লিয়াজোঁ উপকমিটির আহ্বায়ক জুলহাস আলম। অনুষ্ঠানে প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নেতৃবৃন্দ ও সিনিয়র সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।