“দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি
তাই যাহা আসে কই মুখে….”
মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি
জাতীয় কবি অবশ্যই বিদ্রোহী কাজী নজরুল ইসলাম “দেখিয়া শুনিয়া ক্ষেপিয়া গিয়াছি, তাই যাহা আসে কই মুখে….” বলিয়া থামিয়া থাকেন নাই। বরং “লাথি মার ভাংরে তালা যতসব বন্দীশালা আগুন জ¦ালা……”
এমনিভাবে বৃটিশ রাজশক্তির সিংহাসন হইতে শুরু করিয়া এক সময়ের দস্যুবাহিনীর সবকিছু কাঁপাইয়া তুলিয়াছিলেন। আমরাও ক্ষেপিয়া চলিয়াছি কিন্তু কোথাও একটা ঢিল পর্যন্ত ছুড়িতে পারিতেছি না। সমস্ত শক্তি যেন হারাইয়া বসিয়াছি।
গত কয়েকদিনে চকবাজার হইতে শুরু করিয়া বঙ্গবাজার, নিউ মার্কেট, উত্তরা বিজিবি মার্কেট, বায়তুল মোকাররমের জুয়েলারি মার্কেটের মতো বিশাল বিশাল বানিজ্যিক কেন্দ্র ছাড়াও ছোটখাটো অনেক জায়গায়, এমনকি ঢাকার বাইরেও অগ্নিকান্ডে হাজার হাজার কোটি টাকার মালামাল জ¦লিয়া পুড়িয়া ছাই হইয়াছে। বস্তুত কেবল মালামাল নয়, ছোটখাটো ব্যবসায়ী বা তাহাদের গরীব কর্মচারীর কলিজাটাই পুড়িয়াছে। প্রায় সবগুলি অগ্নিকান্ডই ঘটিয়াছে ভোররাতে। ইহা যে স্যাবোটাসের আলামত তাহা ভাবিতে কী ভূল হইবে? এই অগ্নিসন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করা কী খুব দুষ্কর হইবে?
স্বাধীনতার পর হইতে এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু হত্যা, গ্রেনেড হামলা ছাড়াও দুটি অগ্নিসন্ত্রাসের দু:সহ সময় আমরা অতিক্রম করিয়াছি-
১। ১৯৭৪-৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুহত্যার পূর্বে এখানে পাটের গুদামে আগুন, ওখানে সার কারখানায় আগুন, ওখানে পাওয়ার প্ল্যান্টে আগুন। ব্রাশ ফায়ার করে ঈদের নামাজ পড়া অবস্থায় হত্যা, থানা লুটের মতো ঘটনা তো অজানা নয়। নাশকতা চরমে পৌঁছেছিল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তাহার পর মিলিটারি জিয়া ৬ বছর, বিচারপতি সাত্তার ৯ মাস এবং মিলিটারি এরশাদ দেশটাকে উর্দি পরাইয়া লেফট-রাইট করাইয়াছে।
২। বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা চালাইয়া কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৩জন নেতা কর্মী ঘটনাস্থলে প্রাণত্যাগ করেন এবং তিন শতাধিক আহত হন। তাহাদের মধ্যে পরিবর্তিতে প্রথম সরাসরি ভোটে নির্বাচিত মেয়র মুহম্মদ হানিফ, মুক্তিযুদ্ধের দুই মহান সংগঠক নেতা আবদুর রাজ্জাক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত প্রয়াত হন। এখনও আহত অনেক নারী-পুরুষ দারুন কষ্টে জীবন যাপন করিতেছে। প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ম শেখ হাসিনা তাহাদের দেখভাল করছেন।
৩। এখন যে অগ্নিকান্ডের উল্লেখ করিতেছি, ঢাকা ও বাহিরের তাহা এতোই জঘন্য যে বাস, ট্রাক, রিকশা, অটো রিকশা, ট্রেন, লঞ্চে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ এবং দেড় শতাধিক যাত্রী বা পথচারী নিহত হইয়াছে। এমনকি গরু বহনকারী ট্রাকে পেট্টোল বোমা মারিয়া ট্রাকের সাথে সাথে গরু পর্যন্ত পোড়াইয়াছে। পরিচয় জামাত-বিএনপি নয় কী?
অতীত অভিজ্ঞতা ও বর্তমান গতিবিধি পর্যালোচনায় তাহাদের পরিচয় নিয়ে কয়েকটি কথা বলা দরকার। বিএনপি-জামাত ২০০৮ এর নির্বাচনে গো-হারা হারিয়া এবং পরবর্তীতে নির্বাচন বর্জন করিতে করিতে এখন নিজেরাই বর্জিত গাড়িতে উঠিয়াছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকী, এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পর্যন্ত অকথ্য অশোভন ভাষায় গালাগাল, মিথ্যা বচন এসব কিসের আলামত? মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুমিন ফারহানা, শ্যামা ওবায়েদ প্রমুখ নেতার কথা-বার্তা সোস্যাল মিডিয়ায় শুনলে একটি ইঙ্গিততো নিশ্চয়ই সামনে আসে। কাহারও কাহারও আত্মপরিচয় প্রকাশ পাইতে দেরী হয় না। ক্ষমতা তাহাদের পাইতেই হইবে। নিদেনপক্ষে উচ্ছিষ্ট?