নারী নির্যাতন, নিপীড়ন, ধর্ষণ, সাইবার বুলিং, মোরাল পুলিশিং এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় ঢাবির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা ৫ আগস্টের পর সাত মাসেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। তারা জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি জানান।
সমাবেশে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহী নায়েব বলেন,
“আমরা নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশায় অভ্যুত্থান করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুফল পাইনি। ধর্ষণ-নিপীড়নের কারণ খুঁজছি না, তাই সমাধানও হচ্ছে না। মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমূলে উৎপাটন করতে হবে, নইলে স্থায়ী সমাধান সম্ভব নয়।”
তিনি আরও বলেন,
“সংবিধানে এ সংক্রান্ত আইনগুলো যথাযথ নয়। ধর্ষণের সংজ্ঞায়ন ও বিচারব্যবস্থা পর্যাপ্ত নয়, ফলে ধর্ষকদের শাস্তির আওতায় আনা কঠিন হয়ে পড়ে।”
২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাফিজ খান বলেন,
“আমরা হতাশা নিয়েই এখানে দাঁড়িয়েছি। এত রক্তের বিনিময়ে পাওয়া এ দেশ এভাবে চলতে পারে না। সমাজের নানা স্তরে নিপীড়ন ও সাইবার বুলিংকে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে, যা মেনে নেওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন,
“নারী ও পুরুষ সবাইকে নিরাপত্তা দিতে হবে। যদি প্রশাসন তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্টদের পদত্যাগ করতে হবে।”
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হযরত হানিয়া বলেন,
“আমাদের নারীরা কেন নিরাপত্তাহীন? সরকার কেন ব্যর্থ হচ্ছে? আমরা চাই নারী ও শিশুদের বিকশিত হওয়ার নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত হোক। সরকারের ব্যর্থতা আমাদের জাতি হিসেবে পিছিয়ে দিচ্ছে।”
তিনি আরও বলেন,
“আমরা এ সমাবেশ থেকে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের নিরাপত্তা চাই।”
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন, যেমন—
- “অনিরাপদ আমার বোন, জবাব দাও প্রশাসন”!
- “আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই”!
- “ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”!
শিক্ষার্থীরা ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান এবং আইনের সংস্কারের আহ্বান জানান।