ধর্ষণের শিকার হয়ে নিহত আট বছরের শিশুর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার এক গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিশুটির মরদেহ মাগুরায় পৌঁছানোর পর থেকেই এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আগুন দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে ঘরবাড়ির বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়।
এ ঘটনার পর গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরা আগেই বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা জানান, বাড়ির ভেতরে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মাহফুজুর রহমান বলেন, “এটা কেবল একটি প্রতিবাদ। যে নৃশংসভাবে একটি অবুঝ শিশুকে নির্যাতন করে হত্যা করা হলো, তার জন্য কঠোর শাস্তি চাই আমরা।”
শিশুটির চাচা বলেন, “আমাদের পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা বিচার চাই। ওদের বাড়িতে আগুন দেওয়া আমাদের প্রতিবাদের প্রতীক।”
এদিকে, ঘটনার পর মাগুরার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মাগুরা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা জানান, “অভিযুক্তদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। আগুন লাগানোর সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”
তিনি আরও বলেন, “অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার মামলা হয়েছে। তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। আইন নিজের হাতে তুলে না নিয়ে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাই।”
পুলিশ জানায়, ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত চারজনকে আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে, শিশুটির জানাজা শেষে গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামের মানুষ দ্রুত বিচার ও কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছে।