মিরপুরে বাউনিয়া ও উত্তরার খিদির খাল পরিদর্শন করেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ
বুধবার (০৫ মার্চ) সকাল ৭টায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন মিরপুরে বাউনিয়া ও উত্তরার খিদির খাল পরিদর্শন করেন পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন স্থপতি ফজলে রেজা সুমন এবং খালের খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রম বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট নৌবাহিনীর কর্মকর্তাবৃন্দ।
পরিদর্শনকালে পানি সম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে এখানকার খালগুলো খননের বিকল্প নেই। একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকার ধানমন্ডিসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদেরকে ঢাকার খালগুলোতে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে হবে এবং এজন্য খাল খনন কার্যক্রম চলমান থাকবে। শহরের জীববৈচিত্র্য ঠিক রাখতে খাল গুলোকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখতেই হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ডিএনসিসির ৬ টি খাল খননের কার্যক্রম ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং আরো ১৩ টি সহ মোট ১৯ খাল খননের কার্যক্রম এ বছরের মধ্যেই বাস্তবায়ন করা হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দিন দিন ঢাকা শহরের ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকার খালগুলো খনন করে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর উন্নত হবে। ঢাকার খাল গুলো খননের পর খালের পাড়ে দৃষ্টিনন্দন ফুলের চারা এবং ফল ও পাখিদের খাওয়ার উপযোগী বৃক্ষরোপণ করা হবে।’
উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান খাল খনন পরিদর্শনকালে বাউনিয়া খালের সাগুফতা ব্রীজের পাশে এবং উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টর সংলগ্ন খিদির খালের পাড়ে ২ টি গাছের চারা রোপণ করেন।
ডিএনসিসি প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘জলাবদ্ধতা নিরসনে খাল উদ্ধার ও খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খালের খনন ও পরিষ্কার এবং অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা একসাথে চলমান। খালের উন্নয়ন কার্যক্রম ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। পানি দূষণ রোধ করতে ভবনের পয়োঃবর্জ্যের সংযোগ বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুলশান, বনানী, বারিধারা সোসাইটির নেতৃবৃন্দের সাথে সভা করেছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিটি বাড়িতে পয়োঃবর্জ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনার জন্য ইটিপি স্থাপন করতে বলেছি।’
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এ বি এম সামসুল আলম, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোঃ নুরুজ্জামান।
উল্লেখ্য, ডিএনসিসি ও ডিএসসিসি এলাকার মোট ১৯টি খাল সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রথম ধাপে ৬টি খাল সংস্কারের মাধ্যমে কর্মসূচির যাত্রা শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকিগুলোর সংস্কার কাজ সম্পন্ন করা হবে। ৬টি খালের মধ্যে রয়েছে ডিএনসিসি এলাকার ৪টি খাল: বাউনিয়া, কড়াইল, রূপনগর ও বেগুনবাড়ি এবং ডিএসসিসি এলাকার ২টি খাল: মান্ডা ও কালুনগর। খাল সংস্কার কার্যক্রমের মধ্যে সীমানা নির্ধারণ, খাল পরিষ্কার, পাড় সংরক্ষণসহ ব্লু নেটওয়ার্ক নির্মাণ করা হবে।