আন্তর্জাতিক ডেস্ক – তুরস্ক ও সিরিয়ার ভূমিকম্পের পাঁচ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর একের পর এক অলৌকিক ঘটনা ঘটছে। জীবিত উদ্ধারের সংখ্যা বাড়ছে। ধ্বংস্তুপের নিচে চাপা পড়া মানুষদের উদ্ধারের সম্ভাবনা যখন শেষ হয়ে যাচ্ছে, তখন একের পর এক জীবিত উদ্ধারের ঘটনা উদ্ধারকারীদের মনে আশা জাগাচ্ছে। তবে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। মৃত্যু প্রায় ২৪ হাজার হয়ে গেছে।
তুরস্কের হাতায় শহরে ভূমিকম্পের ১১০ ঘন্টা পর ইজ্জেত বেকির (৪৭) নামের এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি একটি পাঁচতলা ভবনের ধ্বংসস্তূপের মধ্যে চাপা পড়ে ছিলেন। এর আগে আন্তাক্যা জেলায় ডোগান ও তেমানুর কোনাক নামের দুই জনকে ভূমিকম্পের ১০৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়। তাদের উভয়ের বয়সই ৫০ বছরের বেশি। দীর্ঘ পাঁচ দিন তারা ধ্বংসাবশেষের নিচে আটকা ছিলেন। ওই একই জেলায় ভূমিকম্পের ১০৮ ঘণ্টা পর এক মা ও তার তিন সন্তানকে উদ্ধার করা হয়।
ভূমিকম্পের ১১১ ঘণ্টা পর ওই একই এলাকায় অজ্ঞাত ৩০ বছর বয়সী এক বিদেশী নাগরিককে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও আন্তাকা এলাকায় সেলমা গুনেস (৬২) নামের এক নারীকে ধ্বংসাবশেষের নীচে জীবিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তিনি প্রায় ১০৮ ঘণ্টা চাপা ছিলেন। কুতাহিয়া প্রদেশের দমকলকর্মী ও উদ্ধারকারীরা প্রায় ১০৯ ঘন্টা পর আরও একজন বয়স্ক মহিলাকে উদ্ধার করেছে। কাহরামানমারাস প্রদেশে ১০৮ ঘণ্টার মাথায় জীবিত পাওয়া যায় ফিলিজ সিফটসিকে (৩৮)। একই অঞ্চলে একটি উদ্ধারকারী দল ১০৮ ঘন্টা আটকে থাকা লায়লা নামে এক নারীকে টেনে বের করে। কাহরামানমারাসে ৪৬ বছর বয়সী ডন গুল বিটমিসকে ১১২ ঘন্টা পর সাততলা ভবনের ধ্বংসাবশেষ থেকে বের করা হয়। গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদাগি জেলায় ৯ বছর বয়সী মিরে কারাতাসকে প্রথম ভূমিকম্পের ১০৮ ঘন্টা পরে উদ্ধার করা হয়েছিল। যদিও ওই শিশুর মা, বাবা ও ভাই-বোন সকলেই ভূমিকম্পে মারা গেছে। একই জেলায় জাহিদ কেয়া নামে এক অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ১১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়।
তুরস্কের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ আমাস্যা থেকে একটি দল কাজিম নামে এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছেন যিনি ১০৮ ঘন্টা আটকে ছিলেন। সোমবার এই অঞ্চলে আঘাত হানা দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্পের ১০৭ ঘন্টা পর গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নিজিপ জেলায় একজন আহত মহিলাকে উদ্ধার করা হয়েছে। দুই ঘণ্টা আগে একই ভবনের ধ্বংসস্তূপ থেকে শিশুসহ দুজনকেও উদ্ধার করা হয়।
তুরস্ক ও সিরিয়া থেকে ভূমিকম্পের পঞ্চম দিনে ৯ শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সাত জন তুরস্কে। আর বাকি দুজন সিরিয়ায়।
প্রথম ভূমিকম্পের প্রায় ৯ ঘণ্টার মাথায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এ দুই ভূমিকম্পের পর অন্তত ৬৪৮টি ছোট ছোট ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। ১৯৯৯ সালে তুরস্কে ৭ দশমিক ৪ মাত্রার ভূমিকম্পে নিহত হয়েছিল প্রায় ১৭ হাজার। সূত্র: আলজাজিরা, রয়টার্স।