আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন হয়েছে বলে জানিয়েছে আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। এই গোষ্ঠীটির প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি। যাকে বাশার আল-আসাদ সরকার পতনের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সিরিয়ায় ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধ রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় গত কয়েক বছরে বেশ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিলো। তবেম শেষ পর্যন্ত তা ঝড়ের গতিতে তছনছ হয়ে গেলো।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। ১৯৮২ সালে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী। ১৯৮৯ সালে তার পরিবার সিরিয়ায় ফিরে এসে দামেস্কের অদূরে বসতি স্থাপন করে।
এরপর জোলানি কী করতেন, তা জানা যায়নি। ২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন। ওই বছরই যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালায়। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন।
২০০৬ সালে জোলানিকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্র। ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় তিনি ছাড়া পান। এরপর তাঁর নেতৃত্বে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত।
প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আবু বকর আল-বাগদাদির সঙ্গে কাজ করেন। ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাগদাদি আকস্মিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এরপর জোলানি সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে বাশার সরকার আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়। ওই সময়টাতে জোলানি আল-নুসরা ফ্রন্টের নাম পরিবর্তন করে জাভাত ফাতেহ আল-শাম রাখেন। পরে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আল-শাম নিয়ে এইচটিএস গঠন করেন জোলানি।
এইচটিএস ২০১৭ সালে সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে তারা দেশটির ইদলিবে প্রশাসন পরিচালনা শুরু করে। তবে অধিকারকর্মী, সংবাদ প্রতিবেদন ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে,সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট কঠোর হাতে শাসন করে, বিরোধীদের সহ্য করে না।