আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পরিবারের সদস্যসহ বাশার আল আসাদ রাশিয়ার মস্কোয় অবস্থান করছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে রাশিয়া তাঁদের রাজনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান করেছে রাশিয়া। জাতিসংঘে দেশটির উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি জানান, সোমবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর আগে মাত্র ১২ দিনের অভিযানে রোববার বাশার সরকারের পতন ঘটায় সিরিয়ার বিদ্রোহী যোদ্ধাদের। এর ফলে দেশটিতে আসাদের দুই যুগের শাসনের অবসান ঘটে।
এর আগে বাশারের বাবা হাফিজ আল–আসাদ প্রায় ২৯ বছর প্রেসিডেন্ট ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর ক্ষমতায় বসেন বাশার।
বাশার আল-আসাদের পালানোর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় ৫৩ বছরের আল-আসাদ পরিবারের শাসনের অবসান হলো। স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের পতন ঘিরে নানা ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা।
বিশ্বনেতাদের কেউ উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন, কেউ উদ্বিগ্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর হাতে ক্ষমতা চলে যাওয়ার আশঙ্কায়।
সিরিয়ার চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি ও তার দল সিরিয়ার পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন বলে জানিয়েছেন সামাজিকমাধ্যমে। এ বিষয়ে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে, প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ পালিয়ে যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছে দেশটির সাধারণ জনতা। শুধু সিরিয়াতে নয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও সিরীয়রা উল্লাসে ফেটে পড়েছে আসাদের পতনে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, আসাদের পালিয়ে যাওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়তেই দামেস্কের রাজপথে নেমে উল্লাসে মেতে ওঠে সিরিয়াবাসী। এর মধ্যেই দলে দলে মানুষ আসাদের প্রাসাদে ঢুকে প্রায় সবই লুট করে নিয়ে গেছে। তছনছ করে দিয়েছে গোটা ভবন।
লুটপাট চালানো এই মানুষদের বেশির ভাগই এসেছে গ্রামাঞ্চল থেকে।
প্রাসাদের ভেতরের পরিস্থিতি খুবই বিশৃঙ্খল। মানুষজন ভেতরে যাচ্ছে। হাতে করে যা পারে তাই-ই নিয়ে যাচ্ছে। আবার জিনিস নিয়ে যাওয়ার সময় ছবিও তুলছে।
বিদ্রোহী যোদ্ধারা যখন রাজধানী দামেস্কে ঢুকছিল, ঠিক তখন ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে দেশ থেকে পালিয়ে যান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। টানা ২৪ বছর সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন তিনি।
আসাদের পতনের জেরে রোববার খুশিতে রাস্তায় নেমে আসে সিরীয়রা। সেনাবাহিনীর ট্যাংকের ওপর উঠে উল্লাস করেন অনেকে। বিদ্রোহী যোদ্ধাদের সঙ্গে উল্লাসে মাতেন সাধারণ মানুষ।
প্রসঙ্গত, হাফিজ আল-আসাদের মৃত্যুর পর ২০০০ সালে মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দ্রুতই প্রেসিডেন্টের পদে আসীন হন বাশার আল-আসাদ। এজন্য দেশটির সংবিধানে প্রেসিডেন্টের সর্বনিন্ম বয়স ৪০ বছর থাকার যে বিধান ছিলো তা পরিবর্তন করতে হয়।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার কয়েক মাস পর তিনি আসমা আল-আখরাসকে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তান- হাফিজ, জেইন এবং কারিম।