Search
Close this search box.

দলের সদস্যদের সংযত আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছি- তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার- তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির উসকানিমূলক বক্তব্যের পরও আমাদের দলকে সংযত আচরণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। কিন্তু ঢাকা শহর কিংবা দেশের অন্য কোনও জায়গায় বিশৃঙ্খলা করলে জনগণই বিএনপিকে প্রতিহত করবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসের জারুলতলায় আয়োজিত বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. মুনতাসীর মামুন। অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বিএনপিকে কখনও দমন করার নীতি অবলম্বন করিনি। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আমাদের সমাবেশ করতে দেওয়া হতো না। আমাদের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দুইপাশে কাঁটাতারের বেড়া থাকতো। সেই বেড়ার বাইরে আমরা যেতে পারতাম না।

মন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা বিএনপি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। শেখ হেলাল এমপির জনসভায় হামলা করে বেশ কয়েকজন মানুষকে হত্যা করেছিল তারা। আহসান উল্লাহ মাস্টার, ড. এস এম কিবরিয়া ও সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের জনসভাসহ আমাদের সভা-সমাবেশে বারবার বিএনপি বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে। কিন্তু আমরা যখন ক্ষমতায় বিএনপির সমাবেশে একটি পটকাও ফোটেনি। তারা যাতে সুন্দরভাবে সমাবেশ করতে পারে, সেই ব্যবস্থাই সরকার সবসময় নিয়েছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিগত সময়ে বিএনপি জ্বালাও পোড়াও রাজনীতি করেছে। তারা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে। আর এ কারণে বিএনপির সমাবেশের আগে মালিক-শ্রমিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে বিএনপি পরিবহন সেক্টরে এত জ্বালাও-পোড়াও করেছে যে, এ কারণে তাদের সমাবেশের আগে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে মালিক-শ্রমিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ রাখে। এ ছাড়া পরিবহন সংগঠনগুলোতে বিভিন্ন দলের মানুষ আছে। পরিবহন ধর্মঘটের সঙ্গে সরকার কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘সরকারকে বিএনপির ধন্যবাদ দেওয়া উচিত। কারণ তাদের সমাবেশে এখন পর্যন্ত একটি পটকাও ফুটেনি। কিন্তু তারা যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আওয়ামী লীগকে কোনো সভা-সমাবেশ করতে দেয়নি। আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে বোমা হামলা করে তারা মানুষ মেরেছে। অথচ এখন বিএনপির সমাবেশে সব ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সরকার।

আগামী ৪ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে অনুষ্ঠেয় আওয়ামী লীগের জনসভায় কয়েক লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটবে বলেও উল্লেখ করেন হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপ্তি এবং সুনাম নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের ওপর। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুধু পাঠদান ও ডিগ্রি প্রদান নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ হচ্ছে জ্ঞানের চর্চা করা এবং সেই জ্ঞানের চর্চার সঙ্গে বিশ্বাঙ্গনের যোগসূত্র ঘটানো। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৭ বছরের পথচলার পর আজকে ভাবতে হবে, জ্ঞানচর্চার সঙ্গে বিশ্বাঙ্গনের সংযোগ কতটুকু করতে পেরেছে এবং আর কতটুকু করা প্রয়োজন। বিশ্বময় যদি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ছড়িয়ে দিতে হয় তাহলে কয়েকটি কার্যক্রম গ্রহণ করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একটি বাৎসরিক ক্যালেন্ডার করে এখানে আন্তর্জাতিক সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা দরকার। সেখানে কোনটা ন্যাশনাল এবং কোনটা ইন্টারন্যাশনাল সেমিনার-সিম্পোজিয়াম হবে সেটা ঠিক করা। তাহলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়বে, অন্যথায় ছড়িয়ে পড়বে না। আরেকটি আমার প্রস্তাবনা থাকবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কোয়ালিটিপূর্ণ জার্নাল যদি নিয়মিত প্রকাশ পায় এবং সেই জার্নালে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল থেকে সেখানে গবেষণাপত্র ও আর্টিকেল ছাপানো হয় এবং সে জার্নালটা যদি আন্তর্জাতিক মানের প্রচারণার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাহলে সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্ব এবং মর্যাদাটাকে বাড়াবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখানে আসার সময় একটি ছোট্ট মানববন্ধন দেখেছি, চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে এখানে ফিরিয়ে আনার জন্য। আমি মনে করি চারুকলা ডিপার্টমেন্টকে একেবারে এই ক্যাম্পাস থেকে সবকিছু গুটিয়ে শহরে পাঠিয়ে দেওয়া একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল, এটি আমার ব্যক্তিগত অভিমত। আমি উপাচার্যের সঙ্গে আলাপ করেছি, অন্তত মাস্টার্স ডিপার্টমেন্টটা আপাতত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চলে আসতে পারে এবং অনার্স ডিপার্টমেন্টটা শহরের ক্যাম্পাসে থাকতে পারে। এখানে অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে, সেটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে।

মন্ত্রী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। এরপর তিনি যে হলে ছিলেন সেই সোহরাওয়ার্দী হলে যান। সেখানে যেই কক্ষে তিনি থাকতেন সেখানে অবস্থানরত বর্তমান শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর বেনু কুমার দে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবদুল করিম, সাধারণ সম্পাদক ও চিটাগাং চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম, চট্টগ্রাম মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোজাফ্ফর আহমদ, চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ ও নাজিম উদ্দিন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ