স্টাফ রিপোর্টার- তুরস্কের রাষ্ট্রপতি রিসেপ তাইয়েব এরদোগানের শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পাঁচদিনের সফরে তুরস্কে পৌঁছেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বঙ্গভবন প্রেস উইং জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৪টায় আঙ্কারা ইসেনবোগা বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি।
সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম আমানুল হক। এ সময় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা দিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি উড়োজাহাজ রাষ্ট্রপতি ও তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
তুরস্ক সরকারের আমন্ত্রণে রাষ্ট্রপতি আঙ্কারার প্রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্সে আগামী ৩ জুন বিকেল ৫টায় (তুরস্কের স্থানীয় সময়) শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বঙ্গভবনের দেওয়া সূচি অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি সফরকালে আঙ্কারার কানকায়া প্রাসাদে রাষ্ট্রপতি এরদোগান আয়োজিত একটি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজে অংশ নেবেন। এছাড়া উচ্চ পর্যায়ের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে তার। তুরস্ক সফরকালে রাষ্ট্রপতি আঙ্কারায় শেরাটন আঙ্কারা হোটেলে অবস্থান করবেন। আগামী ৬ জুন সন্ধ্যায় দেশে ফেরার কথা রয়েছে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিনের।
জানা যায়, তুরস্কের নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শনিবার (৩ জুন) শপথ নেবেন রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান। অন্যদিকে মন্ত্রিসভার সদস্যরা রোববার (৪ জুন) শপথ গ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। খবর তাসের।
ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) মুখপাত্র ওমার সেলিক বলেন, শপথ গ্রহণের পরপরই এরদোয়ান তার নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের ঘোষণা দিতে পারেন। বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে মাত্র তিনজন তাদের স্বপদে বহাল থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তারা হলেন: পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী। বর্তমান এরদোয়ান সরকারের শেষ অধিবেশন ছিল বুধবার (৩১ মে)। এটি মস্কো সময় সাড়ে ৩টায় শুরু হয় এবং তা কয়েক ঘণ্টা ধরে চলে।
তুরস্কের সর্বোচ্চ নির্বাচন কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল ১৪ মে অনুষ্ঠিত পার্লামেন্ট নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করে। প্রটোকল অনুযায়ী ২ জুন পার্লামেন্ট সদস্যদের শপথ নেয়ার কথা।
গত রোববার (২৮ মে) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ান বিরোধীদলীয় নেতা কামাল কিলিচদারোগলুকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন। নির্বাচনে তুরস্কের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়েপ এরদোয়ান ৫২.১৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগলু পেয়েছেন ৪৭.৮৬ শতাংশ ভোট।
গত ১৪ মে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট হয়। প্রথম দফায় প্রেসিডেন্ট পদে কোনো প্রার্থী এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত করতে না পারায় নতুন করে এ ভোট নেয়া হয়।
প্রথম দফা ভোটে এরদোয়ান পেয়েছিলেন ৪৯.৫২ শতাংশ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কিলিচদারোগলু পান ৪৪.৮৯ শতাংশ ভোট। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীই প্রয়োজনীয় ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় নিয়মানুযায়ী ১৪ দিন পর দ্বিতীয় দফা ভোট হয়। প্রথম দফা ভোটে তৃতীয় স্থান পেয়েছিলেন সিনান ওগান। তিনি পেয়েছিলেন ৫.২০ শতাংশ ভোট। গত ২২ মে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দ্বিতীয় দফা ভোটে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকে সমর্থন দেয়ার কথা জানান তিনি।