আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সৎ সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন।
শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) রাজধানীতে বিজয় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে দুপুর ২টা ১৯ মিনিটে বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়। পরে মগবাজার গিয়ে এ শোভাযাত্রা শেষ হয়। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি যৌথভাবে এ শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে।
শোভাযাত্রায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। তারা রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও জাতীয় পতাকা হাতে র্যালিতে অংশ নেন।
এর আগে, সকাল থেকে শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এরপর দুপুরে অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হয়।
সমাবেশে ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমরা ৫২ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ করেছিলাম। সেই বিজয় দিবসকে সরকার পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে। কারণ স্বাধীনতা যুদ্ধকালে আমাদের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র হত্যা করেছে সরকার। আজও দেশে গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তি নেই। সরকার একটি অলিগার্কি শ্রেণি বানিয়ে দেশের অর্থনীতি লুটপাট করেছে।
তিনি বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে প্রতিবাদী মানুষকে জেলে পুরে রেখেছে এই সরকার। এভাবে তারা বিজয় দিবসকে পরাজয় দিবসে পরিণত করেছে। সরকারের সৎ সাহস থাকলে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন। যেমনটি ১৯৯৬ সালে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের লক্ষ্যে ঘোষণা দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, আজকে সরকার নাকি দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে। তাহলে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তবেই দেখা যাবে জনগণের কাছে কে জনপ্রিয়? এখন যেভাবে নির্বাচনের সিট ভাগাভাগি চলছে তাকে নির্বাচন বলেনা। এটা পৃথিবীর কোথাও নেই। বিশ্বের কোথাও ভোট চুরি করেনা।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতার জন্য রাজনীতি করে না। জনগণের কল্যাণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতি করে। আসুন আমরা সবাই দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি।
শোভাযাত্রায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নজরুল ইসলাম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, কামরুজ্জামান রতন, তাইফুল ইসলাম টিপু, কাদের গণি চৌধুরী, বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, হাসান মামুন, অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমান, অধ্যাপক ড. ছিদ্দিকুর রহমান খান, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক কামরুল আহসান, প্রকৌশলী মাহবুব আলমসহ ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, কৃষকদল, মৎস্যজীবী দল, শ্রমিক দলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজারও নেতাকর্মী অংশ নেয়।