Search
Close this search box.

ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের সম্ভাবনাময় বাজার, অবদান রাখবে জাতীয় অর্থনীতিতে

স্টাফ রিপোর্টার:  দেশে ক্রমশ বাড়ছে ইলেক্ট্রোলাইট পানীয়ের (ড্রিংকস) জনপ্রিয়তা। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এমন পরিস্থিতিতে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের জন্য সঠিক মান নির্ধারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে। সঠিক বিএসটিআই মান (স্ট্যান্ডার্ড) নির্ধারণ করা গেলে দেশের অর্থনীতি এবং বাজারের জন্য সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা।

এ পানীয়ের জনপ্রিয়তা এবং সম্ভাবনা বিবেচনায় নিয়ে সম্প্রতি বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস তৈরি ও বাজারজাত করার জন্য প্রয়োজনীয় মান নির্ধারণের লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা থাকার কারণে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস বিশ্বজুড়েই জনপ্রিয়। প্রচণ্ড গরমে শরীরে পানির পরিমাণের ভারসাম্য (হাইড্রেশন) বজায় রাখতে সাহায্য করে এই পানীয়। এছাড়াও, পানিস্বল্পতা (ডিহাইড্রেশন) এড়াতে শরীরে সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মতো বিভিন্ন ইলেক্ট্রোলাইটস জরুরি।

ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস শরীরে এসব ইলেক্ট্রোলাইটসের সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি শরীরে তরল-জাতীয় উপাদানের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। এই পানীয় অ্যাথলেট, ক্রীড়াবিদ এবং বিশেষ করে যারা শারীরিক কসরত করেন তাদের জন্য বেশ উপকারী।

এসব স্বাস্থ্যগত উপকারিতার কারণে এসব পানীয় দিন দিন বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশেও যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। নতুন ক্যাটাগরি হিসেবে এই পণ্য বাজারজাত করলে স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।

সাধারণত ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসকে বৃহত্তর এনার্জি এন্ড স্পোর্টস ড্রিংকস খাতের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত (২০২৪) ধারণা করা হয়, এ খাতের আকার ১২৮.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই বাজারের প্রত্যাশিত সমন্বিত বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (কমপাউন্ড অ্যানুয়াল গ্রোথ রেট – সিএজিআর) ৭.৬১ শতাংশ। এই হিসাব অনুযায়ী, ২০২৯ সাল নাগাদ এই খাতের আকার বেড়ে দাঁড়াবে ১৮৫.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তবে, বাজারজাত করার জন্য নির্দিষ্ট কোনো ক্যাটাগরি এবং বিএসটিআই- এর পক্ষ থেকে এই ক্যাটাগরির জন্য নির্ধারিত মান (স্ট্যান্ডার্ড) না থাকায় তৈরি হয়েছে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির।

এ বিষয়ে বিএসটিআই- এর উপ-পরিচালক (সিএম) মোহাম্মদ আরাফাত হোসেন বলেন, “ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের একটি বিশাল বাজার রয়েছে এবং এই খাতের সম্ভাবনা অনেক। সঠিকভাবে এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা গেলে সকল অংশীদার এবং আমাদের অর্থনীতি উপকৃত হবে বলে আমরা মনে করি। এই খাতের সম্ভাবনাকে বিবেচনায় নিয়ে বিএসটিআই এই ক্যাটাগরির জন্য মান নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে। মান নির্ধারণের পর স্থানীয় উৎপাদনকারীরা বিএসটিআই থেকে অনুমোদন নিয়ে তাদের পণ্য বাজারজাত করতে পারবেন।”

খাত সংশ্লিষ্টরা মনে করেন যে, এই ধরনের পদক্ষেপ বাজার নিয়ন্ত্রণ ও বিকাশের পাশাপাশি ভোক্তা এবং ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে।

মান নিয়ে প্রশ্ন থাকার কারণে বর্তমানে অনেক ভোক্তা এসব পানীয় কেনা থেকে বিরত থাকছেন। এমন পরিস্থিতিতে বিএসটিআই মান অনুমোদন পাওয়ার প্রক্রিয়াকে আরও সহজতর এবং ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের গুণমান নিশ্চিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ঝুঁকিও হ্রাস পাবে এবং আরও বেশি মানুষ এই পানীয় কিনতে উদ্বুদ্ধ হবেন। যার সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে এই বাজারের প্রবৃদ্ধির ওপর।

এছাড়া, বিএসটিআই নির্ধারিত মান একটি নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ বাজার তৈরিতে ভূমিকা রাখবে। উপকৃত হবেন উৎপাদনকারী, ভোক্তা এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থাসহ খাতসংশ্লিষ্ট সবাই। দেশে ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকসের বাজার বিকাশ নিশ্চিত করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমানো সম্ভব হবে, পাশাপাশি সরকারের জন্য তৈরি হবে রাজস্ব আদায়ের নতুন খাত।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ