Search
Close this search box.

পদ্মাসেতু নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্র জাদুঘরে রাখা হবে : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘পদ্মাসেতু নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্র জাদুঘরে রাখা হবে’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মাসেতু নির্মাণে ব্যবহৃত যন্ত্র জাদুঘরে রাখা হবে।’ মঙ্গলবার একনেক সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন। বৈঠকে  সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী।

পদ্মাসেতু নির্মানে যারা জড়িত ছিলেন, তাদের সবার সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। সভায় ১০ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভায় জানানো হয়, তিন বছরেও শেষ হয়নি ৪৬টি স্থানে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন নির্মাণ প্রকল্প। এজন্য আবারও মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানান, পদ্মাসেতু নির্মাণের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক থেকে শুরু করে কর্মকর্তা, কর্মচারী যারা যারা কাজ কর্মের সঙ্গে ছিলেন তাদের সঙ্গে ছবি তুলবেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া সচিব-মন্ত্রী সবার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ছবি তুলবেন। দরকার হয় গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে ছবি তুলবেন। শুধু ছবি তোলা নয়, সেই সঙ্গে একটা মিউজিয়ামও হবে। সেই মিউজিয়ামে ছবিগুলো রাখা হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বড় বড় সেতুর পাশে মিউজিয়াম থাকে।

মূল্যস্ফীতিকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট করার একনেকের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে বলে জানান প্রতিমন্ত্রী।

তিনি আরও জানান, হাওর এলাকায় ভবিষ্যতে যে সড়ক হবে সেগুলো উড়াল সড়ক করা হবে। পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে কালভার্টের পরিবর্তে ব্রীজ করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের প্রতিটি উপজেলায় কমপক্ষে একটি করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপনে গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। ৫৫০টি উপজেলায় স্টেশন স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ জটিলতায় কাজ এগিয়ে নিতে বিলম্ব হচ্ছে।

এর আগে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘পদ্মা সেতু আমাদের আত্মবিশ্বাস তৈরি করেছে। পদ্মা সেতু সক্ষমতা ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক এবং অপমানের প্রতিশোধ। এই সেতু শুধু সেতু নয়, এটি প্রকৌশল জগতে এক বিস্ময়।’

‘এই একটা সিদ্ধান্ত। যখন আমরা সেতু করতে শুরু করলাম, সবার টনক নড়লো। সবাই সমীহ করতে শুরু করলো যে, না বাংলাদেশ পারে। এই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এগিয়ে যাবে। আমি বলেছি, যেদিন নিজের টাকায় করতে পারব, সেদিন করব। কিন্তু আমার দেশকে অপমান করে টাকা নিয়ে করতে হবে! আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে, যদি এটা না হয় আপনার ইলেকশনের কী হবে? আমার কথা, জনগণ ভোট দেবে না, ক্ষমতায় আসব না। ২০০১ সালে তো আমাকে আসতে দেওয়া হয়নি।’

‘একটি মানসিক যন্ত্রণা আমার পরিবারের ওপরে। আমার মেয়েটাকে, আমার ছেলে, আমার বোন। তাদের ওপর যে মানসিক চাপ! জয়কে নিয়ে স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে-তোমার মাকে বলো, না হলে তোমার বিরুদ্ধে অডিট হবে। সে বলেছিল- হ্যাঁ করো, আমার মাকে এটা বলতে পারব না, আমার বিরুদ্ধে যত এনকোয়ারি আছে করতে পারো, আমি এখানে কোনো অন্যায় করিনি, আমার সবকিছু লিগ্যাল, আমি কোনো ভয় পাই না।’

‘কাকে না তারা চাপ দিয়েছে। শুধু আমার ওপরে? সবার ওপরে। এ রকম অবস্থাতে আমি কিন্তু দমে যাইনি। সততা আমার শক্তি। আমার শক্তি বাংলাদেশের জনগণ। এই জনগণকে অপমান করে কোনো কিছু করবো? এটা নয়। এত চাপ! এই মামলা, যে সমস্ত খেলা। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি। এই যে অপমান! স্টেট ডিপার্টমেন্ট দুই দুই বার আমার ছেলেকে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ডেকে নিয়ে থ্রেট করেছে যে তোমার মাকে বলো-এমডির পদ থেকে ইউনূসকে সরানো যাবে না। গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি ড. ইউনূস বেআইনিভাবে ৭১ বছর পর্যন্ত এমডি পদে ছিল। তাকে কোনো অপমান করা হয়নি বরং তাকে ব্যাংকের উপদেষ্টা ইমেরেটাস হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাকে এমডি থাকতে হবে।’

‘এই যে দেশের বিরুদ্ধে কাজ করা। আমরা ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দোষ দিচ্ছি না। কিন্তু এই ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে দিয়ে তো এটা করানো হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট তার শেষ কর্মদিবসে এটার টাকা বন্ধ করে দিয়ে যায়। আমি, আমার বোন রেহানা, আমার ছেলে কেউ বাদ যায়নি। ড. মসিউর রহমান, আমাদের সচিব মোশাররফ, মন্ত্রী আবুল হোসেন এদের ওপর যে জুলুম তারা করেছে এবং যখন অসত্য অপবাদ দিয়ে যখন পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিল, তখন আমরা বললাম, আমরা নিজের টাকায় করব। অনেকে বোধহয় ভেবেছিলেন এটা অস্বাভাবিক। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমরা করতে পারব। এই আত্মবিশ্বাস আমার ছিল।’

‘আর এর একটাই কারণ ওয়ার্ল্ড ব্যাংক। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ছাড়া কিছু করা যাবে না। তাদের খবরদারি ছাড়া কোন কিছু হবে না। আর বাংলাদেশের কোনো উন্নতি হবে না। আমাকে এটাই বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। আমি বলছি না, আমি মানি না। আমরা পারব। আর যদি পারি করব, না পারলে করব না।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ