স্টাফ রিপোর্টার – আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ৮৭ বছর বয়সে রবিবার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। সাজেদ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সাথে সকলেই শোক জানিয়েছেন।
সাজেদা চৌধুরীর দীর্ঘদিনের সহকর্মী আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা ও বিরোধী দলীয় নেতারাসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আজ বেলা ১১টায় তার নির্বাচনী এলাকা নগরকান্দার এম এন একাডেমি স্কুল মাঠে তার জানাজা হয়। বিকাল ৩টায় ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তার কফিন রাখা হয় সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। আসরের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আরেক দফা জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হবে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে।
শোকবার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সাজেদা চৌধুরী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের পর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় রাখতে তাঁর অবদান জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। দেশের যেকোনো সংকটময় মুহূর্তে তাঁর অসীম সাহসিকতা ও আপসহীন নেতৃত্ব জাতিকে আলোর পথ দেখিয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে এক শূন্যতার সৃষ্টি হলো।
আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের এই কাণ্ডারী, বীর মুক্তিযোদ্ধা, সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন দলের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় তিনি প্রয়াত নেতার আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। ৮৭ বছর বয়সী সাজেদা চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাজেদা চৌধুরী ছিলেন ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা) আসনের সংসদ সদস্য। তরুণ বয়সেই আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হওয়া সাজেদা ১৯৬৯ সালে মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন। ১৯৭১ সালে তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে নেন দলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি হয়ে দেশে ফেরার পর তার সঙ্গেও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা। মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০১০ সালে সাজেদা চৌধুরীকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। স্পিকার তার রুহের মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিবৃতিতে তিনি মরহুমার আত্মার মাগফিরাত কামনা এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
গভীর শোক প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এক শোকবার্তায় অর্থমন্ত্রী মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। ডেপুটি স্পিকার মরহুমার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেছেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ ও মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। এক শোক বার্তায় তিনি প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ড. হাছান তার শোকবার্তায় বলেন, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ এমন একজন রাজনীতিককে হারালো, যিনি পুরোটা জীবন আওয়ামী লীগের জন্য নিবেদিত ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সংকটময় মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৬ সাল থেকে দশ বছর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৮৬ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এর আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর-২ আসন থেকে চার বার নির্বাচিত হয়ে ২০০৯ সাল থেকে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনবার জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী স্বাধীনতা উত্তরকালে দেশ গঠনে প্রত্যন্ত এলাকার জনমানুষের নেতা হিসেবেও বড় ভূমিকা রেখেছেন। আমরা তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করি।
১৯৭৪ সালে তিনি গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপ প্রাপ্ত হন। ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট তাকে বর্ষসেরা নারী (উম্যান অভ দ্য ইয়ার) নির্বাচন করে। সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী সাজেদা চৌধুরী ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন।
বিজ্ঞান প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এক শোকবার্তায় মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন ও তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। এক শোকবার্তায় মন্ত্রী মরহুমার বিদেহী রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান ও প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী মরহুমার বিদেহী রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। এক শোকবার্তায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা একজন মেধাবী, দেশপ্রেমিক ও আপসহীন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালাম। শোকবার্তায় তিনি প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, জাতীয় সংসদের উপনেতার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলের সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃতাধীন সময় থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার ক্ষেত্রে প্রয়াত সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অবদান অনস্বীকার্য। তার এ অবদান জাতি কোনোদিন ভুলবে না।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন উল্লেখ করে নানক বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের পর দলের দুঃসময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রদত্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, দেশ ও জাতির কল্যাণের জন্য নিরলস কাজ করে গেছেন এ মহান মানুষটি। তার মৃত্যুতে দেশ এবং জাতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বগুণ ও নির্মোহ ব্যক্তিত্ব আমাদের চলার পথের পাথেয় হয়ে থাকবে। শোক বার্তায় জাহাঙ্গীর কবির নানক সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এক শোকবার্তায় ডিএনসিসি মেয়র সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। একই সঙ্গে তিনি তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
মেয়র আতিকুল ইসলাম শোকবার্তায় জানান, সাজেদা চৌধুরী ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধে অনন্য ভূমিকা রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের পুনর্গঠনে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদান রেখেছেন তিনি। তার অবদান ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শোকবার্তায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী দলের অন্যতম কাণ্ডারীর ভূমিকা পালন করেছিলেন।
তিনি বলেন, দেশ ও জনগণের কল্যাণে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অবদান ও ত্যাগ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তার মৃত্যুতে আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে তথা দেশের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। ড. মোমেন মরহুম সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার)। আইজিপি আজ এক শোকবার্তায় বলেন, আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর অসামান্য অবদান জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করবে। তিনি রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। তার মৃত্যুতে আমাদের দেশে বিশেষ করে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক শূন্যতা তৈরি হলো যা পূরণ হবার নয়। আইজিপি মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান। সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যু দেশের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ, গণতান্ত্রিক আন্দোলন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা এবং নারীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে তিনি যে অসামান্য অবদান রেখেছেন তা চিরস্মরণীয় থাকবে। সালমান এফ রহমান মনে করেন, প্রতিথযশা এই বরেণ্য রাজনীতিবিদকে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিকাশে এ জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কোর ফেলোশিপপ্রাপ্ত হন। তিনি গার্ল-গাইড এসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক পদক ‘সিলভার এলিফ্যান্ট’ অর্জন করেছিলেন।
শোক জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাজেদা চৌধুরী সততা, মেধা ও কর্মকৌশল দিয়ে সারাজীবন দেশের সেবা করেছেন। তিনি বলেন, সাজেদা চৌধুরী দুর্দিনে আওয়ামী লীগের পাশে থেকে দলকে সংগঠিত করেছেন। তার মৃত্যুতে দেশ অনুপ্রেরণীয় এক গুণী ব্যক্তিত্বকে হারাল।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরী ছিলেন সততা ও নিষ্ঠার মূর্তপ্রতীক। তিনি তার আত্মার শান্তি কামনা করেন।
বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ বলেন, সাজেদা চৌধুরী শুধু আওয়ামী লীগের কাছেই নয়, তিনি সব মানুষের কাছে ছিলেন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। রাজনীতিক হিসেবেও সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতার কমতি ছিল না। তিনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক নেতা।
গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এবং বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। এক শোকবার্তায় প্রয়াতের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন তিনি। একইসঙ্গে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান। গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, দেশ ও মানুষের কল্যাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন তিনি। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনীতির মাঠে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা সহসাই পূরণ হওয়ার নয়। সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে দেশ এক বরেণ্য রাজনৈতিক অভিভাবককে হারালো।
উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে আগস্টের শেষের দিকে ঢাকার সিএমএইচে ভর্তি হন তিনি। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের এই কান্ডারী দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সাজেদা চৌধুরী জাতীয় সংসদের উপনেতা হন। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু এমপি।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলায় মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ ও মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। তিন ছেলে ও এক মেয়ের জননী সাজেদা চৌধুরীর স্বামী গোলাম আকবর চৌধুরী ২০১৫ সালে মারা গিয়েছিলেন। গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নুও।
সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফরিদপুরে। যে কোনো সমস্যায় আমরা আপার কাছে ছুটে যেতাম, তিনি অভিভাবকের তো সুপরামর্শ দিতেন বলে জানিয়েছেন ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ইশতিয়াক আরিফ। সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরের নগরকান্দা ও সালথায়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য সংসদে ফরিদপুর-২ আসনের (সালথা, নগরকান্দা এবং সদরপুররে কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন) ভোটারদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন বহু বছর। রাজনৈতিক সহকর্মীদের কাছে তিনি হয়ে উঠেছিলেন ভরসা আর আস্থার স্থান।
তার মৃত্যুতে সালথা ও নগরকান্দা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিদ দলের নেতারা শোক জানিয়েছেন। ফরিদপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ইশতিয়াক আরিফ বলেন, রাজনীতির যে কোনো সমস্যায় আমরা আপার (সাজেদা চৌধুরী) কাছে ছুটে যেতাম এবং তিনি অভিভাবকের মত সুপরামর্শ দিতেন।
বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এম মোশারফ হোসেন মিয়া বলেন, বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে শুধু তার নির্বাচনী এলাকা বা ফরিদপুরবাসীই নয় দেশ একজন রাজনৈতিক অভিভাবক হারিয়েছে। এই ক্ষতি পূরণ হওয়ার নয়।
মুক্তিযুদ্ধ এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে দলকে সুসংগঠত করতে সাজেদা চৌধুরীর ভূমিকার কথাও স্মরণ করছেন তার দলের কর্মীরা। নগরকান্দা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসেন মিয়া জানান, সাজেদা চৌধুরীর অসুস্থতার কারণে নগরকান্দার আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন স্থগিত করা হয়। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর পর সোমবার এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল।
ফরিদপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুর হোসেন, সাবেক সংসদ শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর, ফরিদপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সাবেক সাংসদ কাজী জাফর উল্লাহসহ বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ শোক জানিয়েছেন প্রবীণ এই আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে। স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশ নারী পুনর্বাসন বোর্ডের পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা চৌধুরী। একই সময়ে বাংলাদেশ গার্লস গাইডের ন্যাশনাল কমিশনারও ছিলেন।
এ ছাড়া শোক প্রকাশ করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ুমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারসহ অনেকেই।