স্টাফ রিপোর্টার – বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের স্থলভাগে এসে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এরপর এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের আসামের দিকে চলে গেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে।
আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ বাংলাদেশের স্থলভাগে এসে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এরপর এটি আরও উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতের আসামের দিকে চলে গেছে। এটি ক্রামান্বয়ে দুর্বল হচ্ছে।
তিনি জানান, এরই মধ্যে বাংলাদেশের আবহাওয়া পরিস্থিতি উন্নতি হতে শুরু করেছে। দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলের বৃষ্টি থেমে গেছে। বিভিন্ন স্থানে দু’দিন পর রোদের দেখা মিলেছে । বজলুর রশিদ আরও জানান, সোমবার মধ্যরাতে উপকূল অতিক্রমরত ঘূর্ণিঝড় “সিত্রাং’ আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অতি দ্রুত অগ্রসর হয়ে ভোলার পাশ দিরয় বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে। এটি উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি ঝরিয়ে দ্রুত দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং ওই সময় এটি স্থল নিম্নচাপ আকারে ঢাকা-কুমিল্লা-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও এর আশপাশের এলাকায় অবস্থান করছিল। পরে ‘সিত্রাং’ স্থল নিম্নচাপ আকারে ময়মনসিংহ অঞ্চলের উপর দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম কর ভারতের আসামের দিকে চলে গেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাবে রোববার (২৩ অক্টোবর) থেকেই দেশের আবহায়া পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে। উপকূলীয় এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি শুরু হয়। সেই বৃষ্টি চলে সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত। রংপুর বিভাগ ছাড়া মোটামুটি সারাদেশেই হালকা ও মাঝারি ধরনের এবং ভারি বৃষ্টি হয়, কোথাও কোথাও অতিভারি বৃষ্টিও হয়। রবিবার দিবাগত রাতে ঢাকায় হালকা বৃষ্টি শুরু হয়। সোমবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে বৃষ্টির মাত্রা। সোমবার মধ্যরাত পর্যন্ত টানা বৃষ্টি হয় ঢাকায়।
রবিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে সবচেয়ে বেশি ২৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টি পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সোমবার সকালে ঢাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে মেঘ। দু’দিন পরে ঢাকায় রোদ উঠেছে। সূত্র – বাসস।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এখনও অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুটের বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।