স্টাফ রিপোর্টার – ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ৩২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে। এরপর মাদারীপুরে ৩১৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। ঢাকায় ২৫৫ মিলিমিটার, টাঙ্গাইলে ২৫১ মিলিমিটার, ফরিদপুরে ২১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রবল বাতাসও ছিল।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান আগেই বলেন, ১৩ জেলায় ক্ষতির আশঙ্কা বেশি। এসব জেলার মধ্যে রয়েছে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বরিশাল।
চট্টগ্রাম খুলনা এবং বরিশাল বিভাগের বেশিরভাগ জায়গায় এটি আঘাত হানে এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের দ্বীপ অঞ্চলগুলো বিশেষ করে মহেশখালী, সন্দীপ ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। তিনি বলেন, লঘুচাপ শুরুর পর থেকেই ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। দেরি করা হয়নি।
সিত্রাংয়ের দাপটে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে বাংলাদেশের বেশ কিছু এলাকা। সোমবার গভীর রাতে তাণ্ডব চালানোর পর শীতল হয়েছে পরিস্থিতি। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং উপকূলে শক্তি হারিয়ে এখন নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে সিত্রাং কাঁটা থেকে মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। বিপদমুক্ত হতেই দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোতে সতর্কতা কিছুটা শিথিল করা হয়েছে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম,পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতরের তরফে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলের পর সিত্রাংয়ের কোন প্রভাব থাকবে না। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ সোমবার বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় ভোলার কাছে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত করেছিল। মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সোমবার রাত সাড়ে ৯ টায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে বাতাসের গতিবেগ ছিল সবচেয়ে বেশি। সেখানে ঘণ্টায় ৭৪ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছিল সেই সময়। সিত্রাং ঘূর্ণিঝড়ের এটাই ছিল সর্বোচ্চ গতিবেগ।
এদিকে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা নোয়াখালি, ভোলা, বরিশাল ও কক্সবাজারসহ উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় সিত্রাংয়ের জেরে ৯ ফুট উচ্চতা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। জানা গিয়েছে, পর্যন্ত মোট ১৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে সিত্রাং। ঝড়ের দাপটে কোথাও গাছ, আবারও কোথাও বাড়ি ভেঙে পড়েছে। আর সেই ধ্বংসাবশেষের নীচে পড়েই অধিকাংশ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন উপকূল ও নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৭ লক্ষ মানুষ।
সিত্রাংয়ের কারণে বাংলাদেশের প্রায় অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মঙ্গলবার বন্ধ থাকে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেগুলো অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে বলেও জানানো হয়েছে। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৫ টি জেলায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। সেই জেলার তালিকায় রয়েছে,কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালি,লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালি, ফেনি ও বরিশাল। এছাড়া অন্যান্য জেলাতেও সিত্রাংয়ের জেরে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।