স্টাফ রিপোর্টার – বাংলাদেশের উন্নয়ন অবিশ্বাস্য। বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবাগ এমনটিই বলেছেন। ট্রটসেনবাগ সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কার্যালয়ে (পিএমও) সৌজন্য সাক্ষাত করতে এলে একথা বলেন।
বিশ্বব্যাংকের এমডি উন্নয়নের ধারায় ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব। বিশ্ব ব্যাংকের এমডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস্) অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবাগ বলেন, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর সামনে চ্যালেঞ্জ আছে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এসব দেশকে নতুন প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
ঢাকা সফর সম্পর্কে বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবার্গ বলেন, বিগত সময়ে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন অবিশ্বাস্য।
এই সময়ে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকট কাটিয়ে উঠতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমন আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিদ্যমান সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করুন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮২৪ মার্কিন ডলারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিডের আঘাত করার আগে বাংলাদেশে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল। করোনা আঘাত করার পর কিছুটা কমে যায়। এরপর আমরা আস্তে আস্তে উন্নতি করতে থাকি। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় উন্নত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের জন্য উন্নত দেশগুলো দায়ী। তাদের উচিত ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে সহায়তা করা। কিন্তু তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রাখছে না।
নিজস্ব তহবিল থেকে উপকূলে সবুজ বেস্টনি, টেকসই বাড়ি নির্মাণসহ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলোকে বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল ক্ষুধা, দারিদ্র্য মুক্ত উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা। মানুষের জন্য অধিকতর উন্নত ও সুন্দর জীবন নিশ্চিত করার মাধ্যমে আমরা সে স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছি।
প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসেডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, সিনিয়র অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।