স্টাফ রিপোর্টার – পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই অঞ্চলের একপাশে ভারত আর একপাশে চীন। তাদের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করে চলতে হয়। আমাদের এই অবস্থানের দিকে সকলেরই নজর। কেননা আগামী বিশ্ব হবে এশিয়ার বিশ্ব। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক নাগরিক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক অর্জন: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এই সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্ট।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সৃষ্টিই হয়েছিল গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। সে কারণে এখানকার গণতন্ত্র নিয়ে অন্যদের (বিদেশি) বাড়াবাড়ি করার দরকার নেই।
ড. মোমেন বলেন, বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও চীন সবার সঙ্গে চলতে হবে। আর যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধু বলেই তারা সুপারিশ দেয়। তাদের সুপারিশকে আমরা স্বাগত জানাই। এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া, সৌদি, জাপান প্রত্যেকের সঙ্গে আমরা খুব ভালো সম্পর্ক রেখেছি।
তিনি বলেন, আমাদের অনেক রিসোর্স আছে। সেটা কাজে লাগতে পারলে আমাদের আরও অর্জন-অগ্রগতি হবে। আমরা সে লক্ষ্যে ডিপ্লোম্যাসির তিনটি নীতি গ্রহণ করেছি। সেগুলো হলো—ইকনোমিক ডিপ্লোম্যাসি, পাবলিক ডিপ্লোম্যাসি এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা।
ড. মোমেন বলেন, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সালে দেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস খুব বেড়ে গিয়েছিল। সেই সময়ে ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার করা হয়েছিল। বর্তমান সরকার ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চায়। তবে দুর্নীতি এখনো হচ্ছে, আমরা দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিতে চাই।
সংলাপের বিশেষ অতিথি পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, আমাদের পররাষ্ট্র নীতি অত্যন্ত সংবেদনশীল। আমরা ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি রক্ষা করে চলেছি। আমাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পররাষ্ট্র নীতি একযোগে সমন্বয় করে দেশ এগিয়ে চলেছে। আমরা যে অগ্রগতি করছি, সেটা বিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে এসেছে।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ স্টাডি ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে কিনা, অনেকে সন্দেহ করেছিলেন। তবে ৫০ বছর পরেও বাংলাদেশ সগৌরবে টিকে রয়েছে, এগিয়ে চলেছে। আমাদের সাফল্য ও অর্জন সারা বিশ্বই এখন দেখছে। আর আজকের উন্নয়ন-অগ্রগতির ভিত্তি রচনা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
সংলাপে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, আমাদের অর্জন অনেক। শিক্ষা, শিশু মৃত্যুর হার কমানো, কৃষিখাতে অনেক সাফল্য রয়েছে। তবে প্রযুক্তিগত ও জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও জোর দিতে হবে। সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. এ এস এম আলী আশরাফ। আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান লিটু, অধ্যাপক ড. উত্তম কুমার বড়ুয়া।