স্টাফ রিপোর্টার – জাতীয় সংসদের উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছেন তার ওপর দাঁড়িয়ে আগামী প্রজন্ম অনেক দূর যাবে। রবিবার জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস-২০২৩ উপলক্ষে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, লাইব্রেরি না থাকলে আমরা পূর্বপ্রজন্ম সম্পর্কে জানতাম না, আর স্মার্ট প্রযুক্তি না থাকলে ভবিষ্যত সম্পর্কেও চিন্তা করতে পারতাম না। তাই লাইব্রেরি এবং প্রযুক্তিকে সমন্বিত করে আধুনিক সুবিধা সম্বলিত স্মার্ট লাইব্রেরি তৈরি করতে হবে। বই সমুদ্রের জ্ঞান নিয়ে আমরা সূর্যের আলোর মতো আলোকিত হবো।
এবারের গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘স্মার্ট গ্রন্থাগার, স্মার্ট বাংলাদেশ’। দেশের সকল পর্যায়ের জনগণকে ‘জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস’-এর তাৎপর্য সম্পর্কে সঠিকভাবে অবহিত ও সচেতন করার লক্ষ্যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর এবং এর আওতাধীন বিভাগীয়-জেলা-উপজেলা গণগ্রন্থাগারে একযোগে দিবসটি উদযাপিত হচ্ছে।
জনগণকে গ্রন্থাগারমুখী করা, পাঠাভ্যাস বৃদ্ধি, মননশীল সমাজ গঠনের কেন্দ্র-বিন্দু ও জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে লাইব্রেরির ভূমিকাকে দৃঢ় করাই জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের মূল লক্ষ্য। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, সুশিক্ষা মানে স্বশিক্ষা। আমি যদি নিজেকে স্মার্ট মনে করি, নিজেকে চৌকষ মনে করি তাহলে আমাদের পড়তে হবে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ। তাই এখানে গুরুত্ব দিতে হবে। জ্ঞানমনস্ক আলোকিত মানুষ তৈরি করতে পারলেই জ্ঞানমনস্ক সমাজ তৈরি হবে। এসব কিছু আসবে লাইব্রেরির আধুনিক ব্যবহারের মাধ্যমে। আলোকিত মানুষ হতে আলোকিত মন-মানসিকতাকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে যেতে হবে। এর জন্য গ্রন্থাগারে আমাদের সময় দেওয়া উচিত। পাঠাগার অভ্যাস তৈরি করা দরকার। তাহলে উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে উঠবে।
আলোচনা সভায় ‘স্মার্ট দেশ গঠনে গ্রন্থাগারের ভূমিকা ও করণীয়’ বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ পাঠ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক মো. নাসিরউদ্দিন মুন্সী। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবুবকর সিদ্দিক।
দিবসটি উপলক্ষে জাতীয় পর্যায়ের পাশাপাশি জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারগুলোতে রচনা, চিত্রাংকন ও বইপাঠ প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব প্রতিযোগিতা ও অনুষ্ঠানে শিশু-কিশোরসহ দেশের নানা শ্রেণি পেশার মানুষ অংশ নেয়। কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠান পালনের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন, বাংলা একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, কবি নজরুল ইন্সটিটিউট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ গ্রন্থাগার সমিতি, বাংলাদেশ গ্রন্থাগারিক ও তথ্যায়নবিদ সমিতি, বেসরকারি গণগ্রন্থাগার সমিতি, বিভিন্ন পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির পেশাজীবী, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একযোগে দিবসটি পালন করেছে।
সকাল ১০টায় গ্রন্থাগার দিবসের উদ্বোধন করা হয়। গ্রন্থাগার দিবসের তাৎপর্য ও গুরুত্বের ওপর এক বিশেষ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন রিমি।