স্টাফ রিপোর্টার – পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম জানিয়েছেন, আইএমএফের ঋণের সঙ্গে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কোন সম্পর্ক নেই। আইএমএফ ঋণ না দিলেও আমাদের কিছু কিছু জায়গায় দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) এর উন্নয়ন সংলাপের প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আইএমএফ আমাদের মোট জিডিপির তুলনায় যে ঋণ দিয়েছে সেটা পরিমাণ খুবই কম। এজন্য বলি আইএমএফের শর্তে দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়েনি। আইএমএফ ঋণ না দিলেও আমাদের ভর্তুকি কমাতে হতো এবং কিছু দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়াতে হতো। সুতরাং আইএমএফ এর ঋণের সাথে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধির কোন সম্পর্ক নেই।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, গত বছরের (২০২২) জানুয়ারি মাসে এই হার ছিল ৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ। এক বছরের ব্যবধানে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৪৬ শতাংশ। নানা কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়তেই থাকে। মূল্যস্ফীতি কখনও পূর্বের অবস্থায় ফেরে না বলে জানান পরিকল্পনা।
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উৎপাদন উপকরনের দাম বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম। এর ফলে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৯ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছিল। গত এক বছরে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে। তবে কয়েক মাস ধীরে ধীরে কমে আসছে। মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মজুরি হারও বৃদ্ধি হচ্ছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মজুরির হার বেড়ে ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ হয়েছে, গত বছরের জানুয়ারি মাসে ছিল ৫ দশমিক ৯৩ শতাংশ। মজুরি ভালোই বেড়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যায় না। কারণ উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। গরুর ফিড ও পোল্ট্রি ফিডের দাম অনেক বেড়েছে। পাশাপাশি পরিবহন খরচও বেড়েছে। সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক কেজি ওজেনর দাম এখন ২৭০ টাকা। ডিমের দামও বাড়তি। তবে শাক সবজির দাম সহজ আছে।
দেশের আর্থিক প্রসঙ্গে ড.শামসুল আলম বলেন, গত এক মাসে রেমিটেন্সের ভালো লক্ষণ দেখতে পারি জুলাই-ডিসেম্বর রেমিটেন্স এসেছিল ১০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার অথচ জানুয়ারি মাসে যোগ করলে বেড়ে দাঁড়াবে ১২ দশমিক ৪৫ বিলিয়ণ ডলার। রিজার্ভ গঠনে প্রবাসী আয় ও এক্সপোর্ট ভূমিকা রাখে। এক মাসে দুই বিলিয়নের বেশি রেমিটেন্স এসেছে। গত এক মাসে রিজার্ভও ইতিবাচক। রিজার্ভের তথ্য এখন অনেক ইতিবাচক। রিজার্ভ ধীরেধীরে ইতিবাচক দেখা যাচ্ছে। এক্সপোর্ট জুলাই-ডিসেম্বর ছিল ২৭ দশমিক ৩১ বিলিয়ন ডলার। এক মাস যোগ করলে ৩২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন। তার মানে এক মাসে রপ্তানি আয়ে বড় ধরণের জাম্প করেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ইমপোর্ট নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছি, ইমপোর্ট কমে গেলে সমস্যা আছে। গত মাসে ইমপোর্ট বাড়তি এটা খারাপ না। কারণ অনেক পণ্য তৈরির জন্যও ইমপোর্ট জরুরি, যেমন আরএমজি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় তথ্য দিয়ে কথা বলি সেই জন্য কঠিন কথাও বলতে হয়েছে। আমি স্বস্তা জনপ্রিয়তা পেতে কথা বলিনি। কারোর প্রতি কখনও অশ্রদ্ধা প্রকাশ করি না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামান, অনুষ্ঠান সঞ্চলনা করেন ডিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক সাহানোয়ার সাইদ শাহীন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ডিজেএফবির সহসভাপতি মাসুম বিল্লাহ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মফিজুল সাদিক,অর্থ সম্পাদক সাইদ রিপন, দপ্তর সম্পাদক এম আর মাসফি এবং কার্যনির্বাহী সদস্য তানঝিলা নিঝুমসহ প্রমূখ।