ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ফরিদা আখতার ও ফরহাদ মজহারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানে পেট্রোল বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে স্যার সৈয়দ রোডে অবস্থিত ‘প্রবর্তনা’ নামক ওই প্রতিষ্ঠানে এই হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতের দিকে হঠাৎ করেই কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সেখানে এসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। হামলার ফলে প্রতিষ্ঠানটির বাইরের অংশে কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
হামলার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে দুইটি অবিস্ফোরিত পেট্রোল বোমার বোতল উদ্ধার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, এই হামলার কারণ এখনও পরিষ্কার নয় এবং হামলাকারীদের শনাক্ত করার জন্য তদন্ত চলছে।
মোহাম্মদপুর থানার ওসি বলেন, “এটি পরিকল্পিত হামলা বলে মনে হচ্ছে। আমরা হামলাকারীদের শনাক্ত করতে কাজ করছি। এর পেছনে কারা জড়িত, তা বের করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে।”
প্রতিষ্ঠানটির মালিক ফরিদা আখতার এবং ফরহাদ মজহার এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “আমাদের প্রতিষ্ঠানে হামলার উদ্দেশ্য কী, তা আমরা জানি না। তবে এটি একটি আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা হতে পারে।”
ফরহাদ মজহার একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, কবি, ও মানবাধিকার কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে মত প্রকাশ করে আসছেন। ফরিদা আখতারও একজন সমাজকর্মী এবং পরিবেশবিদ, যিনি বিভিন্ন আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক বা মতাদর্শগত কারণে এই হামলা হয়ে থাকতে পারে। ফরহাদ মজহার এবং ফরিদা আখতার দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে সমালোচনা করে আসছেন, যা অনেকের বিরাগভাজন হতে পারে।
অন্যদিকে, কেউ কেউ বলছেন, এটি নিছক সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বা ব্যক্তিগত শত্রুতার ফলও হতে পারে। পুলিশ এবং গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে।
এলাকাবাসী এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। তারা বলছেন, “এ ধরনের হামলা আগে এখানে ঘটেনি। এটি আমাদের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার করুক।”
সরকার এ ঘটনায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে যে, হামলার কারণ বের করতে বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, “আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করছি। প্রাথমিক তদন্তের পর বিস্তারিত জানানো হবে।”
এই হামলার ঘটনা নতুন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। বিশিষ্ট নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে আরও সক্রিয় হতে হবে।
এখন সবাই তাকিয়ে আছে পুলিশের তদন্তের দিকে, যাতে হামলার প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হয় এবং দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হয়।