বাসস – বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের নবম আসরে জয়রথ ছুটছেই মাশরাফি-মুশফিকের সিলেট স্ট্রাইকার্সের।
আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বোলারদের নৈপুন্যে সিলেট ৬২ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে ঢাকা ডমিনেটর্সকে। এই নিয়ে নিজেদের প্রথম চার ম্যাচের সবগুলোতেই জিতলো সিলেট। অন্য দিকে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম হারের স্বাদ পেল ঢাকা।
হৃদয়ের ৮৪ ও শান্ত’র ৫৭ রানের সুবাদে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০১ রানের বড় সংগ্রহ পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। জবাবে সিলেটের বোলারদের তোপে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকা।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বিপক্ষে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্বান্ত নেন ঢাকা ডমিনেটর্সের অধিনায়ক নাসির হোসেন।
পাকিস্তানের মোহাম্মদ হারিসকে নিয়ে ইনিংস শুরু করে নাসিরের করা প্রথম ওভারে দু’টি চারে সিলেটকে ১১ রান এনে দেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পেসার তাসকিন আহমেদের করা দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে চার মারেন হারিস। তবে ওভারের শেষ বলে ৬ রান করা হারিসকে আউট করেন তাসকিন।
হারিস ফিরলেও পাওয়ার প্লে’র সুবিধাটা ভালোভাবেই কাজে লাগিয়েছেন শান্ত। তার ২১ বলে ৩০ রানের সুবাদে ৬ ওভার শেষে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫০। অন্যপ্রান্তে শান্ত মেজাজেই ছিলেন তিন নম্বরে নামা তৌহিদ হৃদয়। তবে পরক্ষনেই আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠেন তিনি ।
শান্তর সাথে মারমুখী ব্যাট করে ১১তম ওভারেই সিলেটের রান ১শতে নিয়ে যান হৃদয়। সৌম্য সরকারের করা ঐ ওভারের পঞ্চম বলে ছক্কা মেরে এবারের আসরে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান শান্ত। এজন্য ৩৬ বল খেলেন তিনি।
১২তম ওভারে শান্ত-হৃদয়ের জুটি ভাঙ্গেন পেসার আল-আমিন হোসেন। শর্ট ফাইন লেগে শান্তর দুর্দান্ত ক্যাচ নেন পাকিস্তানের আহমেদ শেহজাদ। আউট হওয়ার আগে ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৫৭ রান করেন শান্ত। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৫৭ বলে ৮৮ রান যোগ করেন শান্ত-হৃদয়।
১৪তম ওভারে এবারে ৩২ বল মোকাবেলায় আসরে টানা তৃতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হৃদয়। ওভারের শেষ বলে ১০ রানে আউট হন চার নম্বরে নামা জাকির হাসান।
জাকিরের আউটে উইকেটে আসেন বিপিএলের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম ম্যাচ খেলতে নামা মুশফিকুর রহিম। ব্যাট হাতে শততম ম্যাচটি স্মরনীয় করে রাখতে পারেননি মুশি। ১৫তম ওভারে স্পিনার আরাফাত সানির চতুর্থ বলে বাউন্ডারি মারলেও, শেষ ডেলিভারিতে এক্সট্রা কভারে নাসিরকে ক্যাচ দেন মুশফিক। ৫ বলে ৬ রান করে আউট হন তিনি।
এরপর শ্রীলংকার থিসারা পেরেরা ১১ ও পাকিস্তানের ইমাদ ওয়াসিম ১ রান করে আউট হন। তবে সিলেটকে ২শ রান এনে দিতে ছক্কার ফুলঝুড়ি ফুটিয়েছেন হৃদয়। ১৮ থেকে ২০তম ওভারের প্রথম বল পর্যন্ত দর্শনীয় ৩টি ছক্কা মারেন হৃদয়। আল-আমিনের করা শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে হৃদয় যখন আউট হন তখন দলের রান ১৯৪।
শেষ চার বলে ১টি চারে ৭ রান তুলে সিলেটের স্কোর ২শ পার করেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ২০১ রান করে সিলেট।
৫টি করে চার-ছক্কায় ৪৬ বলে ৪০ম্যাচ টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৮৪ রান করেন হৃদয়। ৪ বলে ৭ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন মাশরাফি। ঢাকার আল-আমিন ৩টি উইকেট নেন।
২০২ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুতেই সিলেটের দুই পেসার মাশরাফি ও পাকিস্তানের মোহাম্মদ আমিরের তোপের মুখে পড়ে ঢাকা। ৩০ রানে ৩ উইকেট হারায় রাজধানীর দলটি। শেহজাদকে শূন্য ও সৌম্য সরকারকে ৬ রানে বিদায় করেন মাশরাফি। শ্রীলংকার দিলশান মুনাবিরাকে ১২ রানের বেশি করতে দেননি আমির।
চতুর্থ উইকেটে ৪৭ বলে ৭৭ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন মোহাম্মদ মিথুন ও অধিনায়ক নাসির হোসেন। দু’জনের ব্যাটিংয়ে ১২তম ওভারেই ১শ রান পেয়ে যায় ঢাকা। ১৩তম ওভারে মিথুনকে শিকার করে জুটি ভাঙ্গেন পেরেরা। ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ২৮ বলে ৪২ রান করেন মিথুন।
দলীয় ১০৭ রানে চতুর্থ ব্যাটার হিসেবে মিথুনের আউটে ঢাকার ইনিংসে ধস নামে। ইনিংসের ৩ বল বাকী থাকতে ১৩৯ রানে গুটিয়ে যায় ঢাকার ইনিংস। সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন নাসির। ৩৫ বল খেলে ৫টি চার ও ১টি ছয় মারেন তিনি। সিলেটের ওয়াসিম-মাশরাফি-আমির ২টি করে উইকেট নেন।