স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টের শুরুতেই বোঝা গিয়েছিল বাংলাদেশের করুণ অবস্থা হতে চলেছে। এবার সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টেও সেই আলামতই মিলছে। প্রথম ইনিংসেই পিছিয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিন শেষেই ১০৬ রানে এগিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৪০ রান করেছে। কাইল মেয়ার্সের (১২৬*) সেঞ্চুরিতে টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দাপটও দেখাচ্ছে।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ২৩৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। প্রথমদিনের শেষদিকে ১৬ ওভার ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়ে ৬৭ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্রুত রান তুলতে থাকে। দুই ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ৩০ ও জন ক্যাম্পবেল ৩২ রানে অপরাজিত ছিলেন। ১৬৭ রানে পিছিয়ে থাকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দারুণ চাপে রাখা যায়। লাঞ্চ বিরতির আগেই ৪ উইকেট তুলে নেওয়া যায়। ১০০ রানে গিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম উইকেট নেওয়া যায়। ক্যাম্পবেলকে (৪৫) আউট করেন পেসার শরিফুল ইসলাম। এরপর টপাটপ আরও তিনটি উইকেট শিকার করা যায়। ১৩২ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দলের ১৩১ রানে হাফসেঞ্চুরিয়ান ব্র্যাথওয়েটকে (৫১) আউট করেন মিরাজ। এরপর ১৩১ রানে রেইমন রেইফার (২২) ও ১৩২ রানে এনক্রুমাহ বোনেরকে (০) আউট করে দেন পেসার খালেদ আহমেদ।
মনে করা হচ্ছিল, এবার বুঝি ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ঘিরে ধরা যাবে। কিন্তু জারমেইন ব্ল্যাকউড ও কাইল মেয়ার্সই ডুবিয়ে দেন। দুইজন মিলে যে ব্যাটিং আকড়ে থাকেন, দীর্ঘক্ষন আউটই করা যায়নি। দুইজন মিলে দলকে ১৫০ রানে নিয়ে যান। ২০০ রানে নিয়ে যান। ২৫০ রানের কাছেও চলে যায়। দুইজন মিলে বাংলাদেশ বোলারদের দ্বিতীয় সেশনে আর কোন উইকেট শিকার করতে দেননি। ২৪৮ রানও করে ফেলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় সেশনে কোন উইকেট না হারিয়ে ১১১ রান যোগ করে। দিনের শেষ সেশন শুরু হওয়ার এক ওভারই পরই মিরাজের স্পিনে আউট হন ব্ল্যাকউড (৪০)। দুইজনের ১১৬ রানের জুটি হওয়ার পর ভাঙন ধরে। বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা যেন দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলেন। যদিও হাফসেঞ্চুরি করে মেয়ার্স এগিয়ে চলেন, তারপরও উইকেট তো নেওয়া গেল।
নিঃশ্বাস খুব বেশিক্ষন শান্তিমতো ছাড়তে পারেনি সাকিববাহিনী। এবার যে মেয়ার্সের সাথে যোগ দিয়ে জসুয়া ডি সিলভা (২৬*) ব্যাটিং করেই চলেছেন। ৯২ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি হয়েও গেছে। আর কোন উইকেটও পরেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের। এরমধ্যে মেয়ার্স ১৫০ বলে ১০০ রানও করে ফেলেন। দ্বিতীয় টেস্ট সেঞ্চুরি হাকান। বাংলাদেশের বিপক্ষেই এরআগে প্রথম সেঞ্চুরিটি করেছিলেন মেয়ার্স। গতবছর ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে নিজের অভিষেক টেস্টেই দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ২১০ রান করেছিলেন মেয়ার্স। এবার বাংলাদেশকে পেয়ে আবার সেঞ্চুরি হাকালেন। দ্বিতীয় দিন শেষে ১৮০ বলে ১৫ চার ও ২ ছক্কায় ১২৬ রান করে ব্যাটিংয়ে আছেন। এবারও কী ডাবল সেঞ্চুরি করেই উইকেট ছাড়বেন মেয়ার্স? তার এমন অসাধারণ ব্যাটিংয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টে দাপটও দেখাচ্ছে।