মিথুন আশরাফ
বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার লড়াইয়ে আবারও হারলো বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের লড়াই হয়। তাতে ৭ উইকেটে হারল সাকিববাহিনী। আফগানিস্তানের কাছে কাত হয় বাংলাদেশ। ম্যাচটি জিতে সবার আগে সুপার-৪ খেলা নিশ্চিত করে নেয় আফগানিস্তান।
শারজায় টস জিতে আগে ব্যাটিং করে ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান করে বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সৈকত অপরাজিত ৪৮ রান করেন। ৩ উইকেট করে শিকার করেন দুই স্পিনার মুজিব জাদরান ও রশিদ খান। জবাবে আফগানিস্তান ১৮.৩ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রান করে জিতে যায়। ইবরাহিম জাদরান অপরাজিত ৪২ ও নজিবুল্লাহ জাদরান অপরাজিত ৪৩ রান করেন।
টানা দুই জয় পায় আফগানিস্তান। ১ সেপ্টেম্বর এখন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশকে জিততেই হবে। হারলেই এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নেবে বাংলাদেশ।
দুই স্পিনার মুজিব জাদরানের দাপটে শুরুতেই টপাটপ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রশিদ খানও যখন বোলিং করতে আসেন, উইকেট শিকার করে নেন। ২৮ রানের মধ্যেই বাংলাদেশের ৪ উইকেট শিকার করে নেন মুজিব ও রশিদ। মুজিবই ৩ উইকেট শিকার করেন। নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান (১১) ও মুশফিকুর রহিমকে সাজঘরে পাঠান। তখনই আসলে বাংলাদেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে যায়। এরপর আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মিলে কিছুটা এগিয়ে নিয়ে যান। কিন্তু দলের যখন ৫৩ রান হয়, তখন আফিফ হোসেন ধ্রুবকে (১২) আউট করে দেন রশিদ খান। তখন মনে হয় ১০০ রানও হবে না।
রিয়াদ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মিলে ভালোই খেলছিলেন। দলের ৮৯ রানে গিয়ে রশিদ খানের স্পিনের কাছে হার মানেন রিয়াদ (২৫)। তবে সৈকত দমে যাননি। দারুন করেন। দলের ১২৭ রানে গিয়ে মেহেদি হাসান (১১) আউট হন। তবে সৈকত অপরাজিত থাকেন। ৩১ বলে ১ ছক্কা ও ৪ চারে অপরাজিত ৪৮ রান করে দলকে ১২৭ রানে নিয়ে যান সৈকত।
আফগানিস্তানও শুরুতেই উইকেট হারায়। রহমানুল্লাহ গুরবাজকে (১১) দলের ১৫ রানেই আউট করে দেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ১০ ওভারে ৪৮ রান করে আফগানরা। এই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ২ রান কম করে। হারায় ২ উইকেট কম। যেটা আসল কাজ। ১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই ওপেনার জাজাইকে (২৩) আউট করেন সৈকত। ৬২ রানে মোহাম্মদ নবীকে সাজঘরে পাঠান সাইফ উদ্দিন। সাকিব দ্রুত নিজের ৪ ওভার শেষ করে ফেলেন। ১৩ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন।
ইবরাহিম জাদরান মারমুখি হয়ে খেলতে থাকেন। দ্রুত রান স্কোরে জমা করতে থাকেন। নজিবুল্লাহ এসে এমনই মারমুখি হন ১৭ বলে ৬ ছক্কা, ১ চারেই খেলা জিতিয়ে দেন। ইবরাহিম ও নজিবুল্লাহ মিলে অবিচ্ছিন্ন ৬৯ রানের জুটি গড়ে জেতান। ৯ বল বাকি থাকতেই জিতে আফগানিস্তান।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দাপট দেখিয়ে জয় পায় আফগানিস্তান। একরকম লঙ্কানদের উড়িয়ে দিয়েছে। বোলিংয়ে দাপট দেখানোর পর ব্যাটিংয়েও দাপট দেখিয়েছে। টি-টোয়েন্টি বলে কথা। আফগানরা এই ফরমেটে ভয়ংকর দল। এই আফগানিস্তানের বিপক্ষেই খেলতে নামার আগে আতঙ্ক তৈরী হয়। সেই আতঙ্কে বাংলাদেশও উড়ে যায়। সবশেষ দুই দলের লড়াইয়ে বাংলাদেশ হারে। এবারও হারল।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সবশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে হারে বাংলাদেশ। এ বছর মার্চে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে হারে বাংলাদেশ। এরপর দুই দল আবার মঙ্গলবার লড়াই করবে। এবারও হার হলো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এরআগে ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে লড়াই করে মাত্র তিনটি ম্যাচে জিততে পেরেছিল বাংলাদেশ। পাঁচটিতেই হেরেছিল। এবার আরেকটি হার যুক্ত হলো।
এরআগে যখন ২০১৬ সালে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফরমেটে এশিয়া কাপ হয়েছে, তখন আফগানিস্তান খেলতেই পারেনি। এবার প্রথমবার টি-টোয়েন্টি ফরমেটের এশিয়া কাপে খেলছে আফগানিস্তান। প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করেছে। বাংলাদেশের বিপক্ষেও একই ধারা বজায় রেখেছে।