Search
Close this search box.

দেশে ফিরে সাফ জয়ীদের দুঃখের যেন শেষ নেই!

দেশে ফিরে সাফ জয়ীদের দুঃখের যেন শেষ নেই!

স্পোর্টস রিপোর্টার – ইতিহাস গড়েছেন। দেশকে গর্বিত করেছেন। প্রথমবারের মতো সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। অথচ দেশে ফিরে সাফ জয়ী নারী ফুটবলারদের যেন দুঃখের শেষ নেই। শুরুটা হয়েছে রিতু পর্ণা চাকমার চোট দিয়ে। এরপর ফুটবল ফেডারেশনে অধিনায়কের বসার সিট না পাওয়া, বিমানবন্দর থেকে কৃষ্ণা রানী, শামসুন্নাহার সিনিয়রদের টাকা হারানো, আখি খাতুনের বাসায় পুলিশি হয়রানি; এসব নিয়ে আসলে দুঃখের শেষ নেই সাফ জয়ী নারী ফুটবলারদের।

আনন্দ শোভাযাত্রায় চোট পেয়ে রিতু পর্ণা চাকমার কপালে ৩ সেলাই লেগেছে। ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দিয়ে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়নশিপে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ইতিহাস গড়েন সাবিনারা। দেশে ফেরার পর বিমানবন্দর থেকে বাফুফের পথে চলছিল চ্যাম্পিয়ন মেয়েদের ছাদখোলা বাস। কিন্তু এই আনন্দ শোভাযাত্রার মাঝেই এলো দুঃসংবাদ। ছাদখোলা বাসে করে বাফুফেতে যাওয়ার পথে মাথায় চোট পেয়েছেন সাফ বিজয়ী বাংলাদেশ নারী দলের মিডফিল্ডার রিতু পর্ণা চাকমা। খুব বড় বিপদ না হলেও তার মাথায় লেগেছে তিনটি সেলাই।

ঘটনাটি ঘটে বনানীতে পদচারী সেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময়। ছাদখোলা বাসে থাকা বিলবোর্ডে আঘাত পান রিতু পর্ণা। তার কপাল কেটে গিয়ে রক্ত বের হতে থাকে। তখনই গাড়ি থামিয়ে বহরের সঙ্গে থাকা অ্যাম্বুলেন্সে রিতু পর্ণাকে সিএমএইচে নেওয়া হয়। সেখানে নিয়ে ৩ সেলাই দেওয়া হয় এই মিডফিল্ডারকে। তবে আশার খবর হলো রিতু পর্ণা এখন সুস্থ আছেন।

হিমালয় জয় করে আসার নারী ফুটবল দলের সেনাপতি সাবিনা খাতুন ও চ্যাম্পিয়ন টিমের গুরু গোলাম রব্বানী ছোটনের বসার জন্য সিটই ছিল না! ফুটবল ফেডারেশনে সংবাদ সম্মেলনে বসেছিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সহসভাপতি ও ফিনান্স কমিটির চেয়ারম্যান আবদুস সালাম মুর্শেদী, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। সংবাদ সম্মেলনে কিছু অংশে অধিনায়ক সাবিনা ও কোচকে বসতে দেখা গেলেও এদের পেছনে অন্যান্যদের সঙ্গে দাঁড়িয়েছিলেন সাবিনা ও ছোটন। দাঁড়িয়েই সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের বক্তব্য রাখেন তারা।

এ ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা। নেটিজেনরা বলছেন, যাদের জন্য আজকের এই উৎসবের আয়োজন, যাদের জন্য এই আনন্দের উপলক্ষ্য, তারাই একটু বসতে পারলো না? এ কেমন আয়োজন বাফুফের।
ইতিহাস গড়ে নারী ফুটবলাররা দেশে ফিরেছেন। সাফ শিরোপা জেতায় পেয়েছেন ছাদখোলা বাসের সংবর্ধনা। গোটা দিন শিরোপা উদযাপনে মেতে থাকেন সাবিনা-সানজিদারা। তবে দিনশেষে দুঃসংবাদ পেতে হয় তাদের। ট্রফি প্যারেডের সময় সাফ জয়ী দলের সদস্য কৃষ্ণা রানীর ব্যাগ থেকে আড়াই লাখ টাকা চুরি হয়েছে।

বুধবার দুপুর সোয়া দুইটায় কাঠমান্ডু থেকে বাংলাদেশে ফেরত আসেন নারী ফুটবলাররা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইতিহাসগড়া ফুটবলারদের বরণ করে নেয় হাজারো ফুটবলপ্রেমী। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে ছাদখোলা বাসে শিরোপা নিয়ে ঢাকা শহর প্রদক্ষিণ করেন নারী ফুটবলাররা। সে সময়ই টাকা চুরি হয় কৃষ্ণা রানীর। গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, যেহেতু দেশে আসার পর আমাদের জন্য বড় ধরনের আয়োজন ছিল। এ জন্য আমরা আমাদের হ্যান্ডব্যাগটাও লাগেজের ভেতরে রেখেছিলাম। পরে যখন লাগেজ খুলি, দেখি ভেতরের ছোট ব্যাগের চেইন খোলা। ব্যাগের ভেতরে আমার ৯০০ ডলার, শামসুন্নাহার সিনিয়রের ৪০০ ডলারসহ আরো অনেকের কিছু ডলার ছিল। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য আড়াই লাখ টাকার মতো। সেগুলোর কিছুই নেই ব্যাগের ভেতর।

সাফজয়ী আঁখির বাড়িতে গিয়ে বাবাকে শাসায় পুলিশ। সারাদেশ যখন সাফজয়ীদের নিয়ে আনন্দে মেতে উঠেছে ঠিক তখন দুঃসংবাদ শুনতে হয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের নারী ফুটবলার আঁখি খাতুনকে। সরকার থেকে পাওয়া জমি নিয়ে আদালতের সমন বুঝে নিতে তার বাবাকে শাসিয়ে গেছে শাহজাদপুর থানা পুলিশ। এমন অভিযোগ করেছেন আঁখি ও তার বাবা। আদালতের সেই কাগজে সই করতে রাজি না হওয়ায় আঁখির বাবাকে থানায় উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার হুমকিও দেন এসআই মামুন- এমনটাই অভিযোগ আঁখির।

এ বিষয়ে ডিফেন্ডার আঁখি বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় শাহজাদপুর থানা থেকে এসআই মামুন আমাদের বাড়িতে এসে আমার বাবাকে আদালতের একটি কাগজে সই করতে বলেন। আমার বাবা সেই কাগজে সই করেননি। তাই আমার বাবাকে এসআই মামুন থানায় নিয়ে যাবে বলে হুমকি দেন এবং গালাগালা করেন। পরে বাবা আমাকে ফোনে বিষয়টি জানান। এসআই নাকি বলেছেন- আমি বাড়ি যাওয়ার পর থানায় যেতে হবে আমাকে। আসলে এমন এক আনন্দঘন মুহূর্তে এমন সংবাদে আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে যায়।

আঁখির বাবা আক্তার হোসেন বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় থানা থেকে এসআই মামুন সাহেব এসে আমাকে একটা কাগজ দিয়ে বলে- আঁখি তো বাড়িতে নেই। তার পরিবর্তে আপনি এই কাগজে সই দেন। আমি বলি কেন সই দেবো আমি তো বাদী বা আসামি কোনোটাই না। আমি পুলিশকে বলেছি, আপনারা ইউএনও মহোদয় বা ডিসি স্যারের সাথে কথা বলেন। তখন আমাকে কটূক্তি করেছে আরেক পুলিশ সদস্য আমাকে ধরে নিয়ে যাবে বলেছে। আসলে এই জায়গাতো আমাদের সরকার দিয়েছে। কোন মামলা বা অভিযোগ হলে সরকারের নামে হবে। আমাদের নামে কেন আদালত সমন পাঠাবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ