স্পোর্টস রিপোর্টার – আর্জেন্টিনাকে ২-১ গোলে হারিয়ে কাতার বিশ্বকাপে বুধবার অঘটন ঘটিয়ে দিয়েছিল সৌদি আরব। এবার বৃহস্পতিবার ৪ বারের বিশ^চ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে হারিয়ে দেয় জাপান। তারাও ২-১ গোলে জাপানকে হারিয়ে দেয়। হতভাগ হয়ে যায় জার্মানি।
আল রাইয়ানের খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে খেলার ৩২ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গুন্ডোগানের গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি (১-০)। রাউমকে গোলরক্ষক গোন্দা ফাউল করলে পেনাল্টি দিয়েছিলেন রেফারি। প্রথমার্ধে আর কোন গোল হয় না। ঠিক যেমন সৌদি আরবের বিপক্ষে ম্যাচে লিওনেল মেসির করা পেনাল্টি গোলে এগিয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। দ্বিতীয়ার্ধে সৌদি আরব যেমন ২ গোল দিয়েছিল। এবার জার্মানির বিপক্ষে জাপান দুই গোল দেয়। খেলার ৭৫ মিনিটে রিতসু ডোয়ানের গোলে সমতা আনে জাপান (১-১)। ৮৩ মিনিটে গিয়ে আসানোর অসাধারণ গোলে এগিয়ে যায় জাপান (২-১)। এরপর আক্রমন পাল্টা আক্রমন চলে। কিন্তু আর কোন গোল হয়নি। শেষপর্যন্ত ২-১ গোলে জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে জাপান। জার্মানির বিপক্ষে তিনবারের দেখায় জাপানের প্রথম জয় এটিই। সেটিও এলো বিশ্ব মঞ্চে দুই দলের প্রথম দেখাতেই।
এর আগে সবশেষ ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ের পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি জার্মান দল। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও বিদায় নিয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকে। তারপর থেকেই যুবা খেলোয়াড়দের ওপর ভর করে তারা ধীরে ধীরে তাদের দলটিকে পুনর্গঠন করতে থাকে এবং এখন তারা আবার বিশ্ব ফুটবলের রাজার আসনে অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত। এবারের বিশ্বকাপে (স্বাগতিক দেশের পর) প্রথম দল হিসেবে কোয়ালিফাই করেছে এই জার্মানিই, যা তাদের শক্তিমত্তারই পরিচায়ক এবং অন্যদিকে, জার্মানির মতোই বিশ্বকাপে তাদের প্রথম প্রতিপক্ষ জাপানও একটি যুবা এবং শক্তিশালী দলই গঠন করেছে। তবে বিশ্বকাপের আগে জার্মান একটি বড় ধাক্কা খেয়েছে অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার মার্কো রিউসের ইনজুরির পর।
এছাড়া ইনজুরির কারণে ফ্লোরিয়ান উইর্টজ এবং অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড টিমো ওয়ার্নারকে ছাড়াই বিশ্বকাপ খেলতে হচ্ছে তাদের। কিন্তু জার্মান তাদের অনুপস্থিতিতে দলে জায়গা দিয়েছে ২০১৪ সালের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক মারিও গোটজেকে। অন্যদিকে জাপানের কথা বলতে গেলে, অভিজ্ঞ মায়া ইয়োশিদা এবং ইউটো নাগাতোমোকে নিয়ে ২৬ সদস্যের দল নিয়ে এবারের বিশ্বকাপে এসেছে। এছাড়া জাপানি মেসি খ্যাত দাইচি কামাদা রয়েছেন দলে। দলের ব্যাক লাইনে আছেন অভিজ্ঞ আর্সেনাল ডিফেন্ডার তাকিহিরো তোমিয়াসুকে।
এ খেলায় শক্তির দিক বিবেচনা করলে এগিয়ে ছিল জার্মানিই। তবে বিশ্বকাপে আসার আগে তাদের সাম্প্রতিক ফর্ম খুব একটা আশাব্যঞ্জক ছিল না। বিশ^কাপে নামার আগে তাদের খেলা সর্বশেষ ছয়টি ম্যাচের মধ্যে তারা জিতেছে মাত্র একটিতে, চারটিতে করেছে ড্র এবং হেরেছে একটিতে। এত বড় টুর্নামেন্টের পূর্বে এমন সব ফলাফল এমনটিই ইঙ্গিত করে যে, তাদের প্রস্তুতি খুব একটা উচ্চমানের হয়নি। তাই ধরা পড়ল। জাপানের কাছেই তারা হেরে গেল। এবারও কী তাহলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় ঘন্টা ঘটতে পারে জার্মানির? সেই প্রশ্নই উঠে গেছে।
