সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নতুন দুই বিচারপতি শপথ গ্রহণ করেছেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সকাল ১০টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেজ লাউঞ্জে এই শপথ অনুষ্ঠিত হয়। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত বিচারপতিরা হলেন— বিচারপতি এ. কে. এম. আসাদুজ্জামান এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
এর আগে, সোমবার রাষ্ট্রপতি বিচারপতি এ. কে. এম. আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুবকে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে আইন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় যে, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৯৫-এর দফা (১) অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের দুই বিচারপতিকে আপিল বিভাগের বিচারক পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ শপথ গ্রহণের দিন থেকে কার্যকর হবে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিলের সুপারিশের ভিত্তিতে এবং প্রধান বিচারপতির পরামর্শক্রমে রাষ্ট্রপতি এই নিয়োগ দিয়েছেন।
বিচারপতি এ. কে. এম. আসাদুজ্জামান ১৯৬৯ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জেলা আদালতের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ১৯৮৫ সালে হাইকোর্ট বিভাগ এবং ২০০১ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০০৫ সালের ২৭ আগস্ট স্থায়ী বিচারপতি হন।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি ও এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৯২ সালে তিনি জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে পেশা শুরু করেন। ১৯৯৪ সালের ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০০২ সালের ১৫ মে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট তিনি হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০০৬ সালে স্থায়ী বিচারপতি হন। তিনি সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমানের কন্যা।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে আজিমপুর কবরস্থান সংরক্ষণ, ধর্ষণের শিকার নারীদের মামলার দ্রুত গ্রহণসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর প্রথাগত অধিকার রক্ষা, অবহেলাজনিত কারণে শিশু জিহাদের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্যানেলভুক্ত শিক্ষকদের চাকরি সরকারিকরণ এবং ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হলফনামা বাধ্যতামূলক করার রায়।
নতুন দুই বিচারপতির নিয়োগ সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।