স্টাফ রিপোর্টার – একদিন আগে বুধবার বর্ণিল আয়োজনে দেশের প্রথম মেট্টোরেলের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম টিকিট কাটেন তিনি। যাত্রাও করেন। বৃহস্পতিবার থেকে সাধারণ যাত্রী নিয়ে মেট্টোরেলের যাত্রা শুরু হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টায় সাধারণ যাত্রী নিয়ে প্রথম ট্রেন ছাড়া হয়। আগারগাঁও ও উত্তরা-উভয় স্টেশন থেকেই ট্রেন ছাড়ে।
ঢাকায় মেট্রোরেল নির্মাণ পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) কর্তৃপক্ষ আগেই ঘোষণা দেয়, সকাল ৮ টা থেকে ট্রেন ছাড়বে। চলবে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত। প্রতিদিন ৪ ঘন্টা করে ট্রেন চলবে। সর্বোচ্চ ২০০ যাত্রী নিয়ে চলবে মেট্রোরেল। পরে চলাচল এবং যাত্রী বাড়ানো হবে। সকাল থেকেই দেখা গেছে সাধারণ মানুষ টিকিট কেটে মেট্রোরেলে উঠতে পারছেন।
মেট্টোরেলে চড়ার জন্য ভোর থেকেই স্টেশন এলাকায় ভিড় করেন মানুষ। তবে স্টেশনে ৮ টার পরই ঢুকতে পারেন। আগে আগারগাঁও থেকে উত্তরা যেতে কম করে হলেও এক ঘণ্টা লাগত। এখন সময় লাগে একেবারে কম। ১০ মিনিট ১০ সেকেন্ডে উত্তরা থেকে আগারগাঁও যেতে সময় লাগে।
অবশ্য প্রথম দিনেই সমস্যা দেখা দেয়। টিকেট মেশিনে সমস্যা দেখা দেয়। তাতে করে কাউন্টারে চাপ পড়ে। আগারগাঁও স্টেশনের দ্বিতীয় তলার প্রধান ফটকও খুলেছে আধা ঘন্টা দেরিতে। প্রথম সকালেই আগারগাঁওয়ে স্টেশনে টিকেট কাটতে গিয়ে বিভ্রাটে পড়েছেন যাত্রীরা। স্টেশনের স্বয়ংক্রিয় ‘টিকেট মেশিন’ কাজ না করায় কাউন্টারে তৈরি হয় চাপ। ‘যান্ত্রিক জটিলতার’ কারণে ফটকও খুলতে দেরি হয়েছে।
বিশ মিনিটের বেশি সময় ধরে কাউন্টারে যাত্রী দাড়িয়ে থাকার পরও টিকিট দেয়া যায়নি। পরে সমাধান হয়েছে। তবে ত্রুটি ঠিকই ধরা পড়েছে। আগারগাঁওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে তিনটি এবং উত্তর প্রান্তে তিনটি অটোমেটেড টিকেট মেশিন রয়েছে। এগুলোর পাশেই থাকে একটি করে কাউন্টার। সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে হাতে টিকেট কেনা যায়। মেশিন কাজ না করায় ভিড় লেগে যায়।
সকালে অটোমেটেড মেশিনে ৬০ টাকা দেওয়ার পরও টিকিট আসেনি। ২০ মিনিট অপেক্ষা করার পর কাউন্টার থেকে হাতে হাতে টিকিট দেওয়া হয়। স্টেশন কন্ট্রোলার সোহেল রানা সকালেই বলেন, ‘টিকেট কাটতে সাময়িকভাবে কিছু সমস্যা হচ্ছে। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশনে বেলা সাড়ে ১১টা বাজতেই তালা লাগিয়ে দেয় কর্তৃপক্ষ। টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন হাজারো যাত্রী এবং দর্শনার্থী। টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে এটাও ঠিক, যে পরিমান যাত্রী ছিলেন, তাতে টিকেট দিলেও ট্রেনে চড়ানো যেত না। কারণ, সকাল ৮ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ট্রেন চলার কথা আগেই জানানো হয়েছে। তাই সাড়ে ১১টা বাজতেই স্টেশনে ঢোকার সিঁড়িতে তালা লাগিয়ে দেয় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ।
মেট্রোরেলের এক কর্মকর্তা জানান, আপাতত সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল চলবে। পরবর্তীতে এই সময় বাড়ানো হবে। এখন মেট্রোরেল স্টেশনের ভেতর যে পরিমাণ যাত্রী আছে তাদের পরিবহন করতেই ১২টা ছাড়িয়ে যাবে।
তেত্রিশ হাজার ৪৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এই মেট্রোরেল নির্মাণকাজ চলছে জাপানের উন্নয়ন সংস্থা জাইকার সহযোগিতায়। শুরুতে সীমিত পরিসরে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে।