প্রতিবেদনে রাষ্ট্রীয় মূলনীতির পাশাপাশি দেশের সাংবিধানিক নাম ও সংসদীয় কাঠামোতে পরিবর্তনের মতো সুপারিশ রয়েছে।
বর্তমানে সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চার মূলনীতি রয়েছে সেগুলো হলো– জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাহাত্তরে যে সংবিধান প্রণীত হয়েছিল, তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার এই চার মূলনীতি গৃহীত হয়েছিল।
প্রস্তাবিত নতুন পাঁচ মূলনীতির মধ্যে বর্তমানের চার মূলনীতির মধ্যে শুধু গণতন্ত্র রাখা হয়েছে। সুপারিশ করা নতুন পাঁচটি মূলনীতি হলো– সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক সুবিচার, বহুত্ববাদ ও গণতন্ত্র।
তিন মূলনীতি বাদ দেওয়ার বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কমিশন সংবিধানের মূলনীতি ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদ এবং এ সংশ্লিষ্ট সংবিধানের ৮, ৯, ১০ ও ১২ অনুচ্ছেদগুলো বাদ দেওয়ার সুপারিশ করছে।
প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট এবং দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ চালুর সুপারিশ করার বিষয়ে জানান তিনি।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ সুপারিশ করার কথা তুলে ধরেন সংস্কার কমিশনের প্রধান।
মৌলিক অধিকারের আওতা সম্প্রসারণের বিষয়ে সুপারিশ করার কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, ‘শুধু তাই নয়, আমরা সাংবিধানিকভাবে তার সুরক্ষা এবং তা যেন বলবতযোগ্য হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য একটা সমন্বিত একক সনদের কথা বলেছি।’
সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশ প্রস্তুত করতে গিয়ে প্রায় এক লাখ মানুষের মতামত নেওয়ার কথা জানান আলী রীয়াজ। কমিশনের সদস্যদের পাশাপাশি ৩২ জন গবেষক এতে কাজ করেছেন।