ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এবং মানবাধিকারকর্মী চৌধুরী রফিকুল আবরার, যিনি সি আর আবরার নামে পরিচিত, আজ বুধবার (৫ মার্চ) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনে এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অধ্যাপক আবরার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে এই দায়িত্ব পালন করছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তবে তিনি একইসঙ্গে শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন, যা সামলানো তার পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। এ কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সি আর আবরারের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে।
অধ্যাপক সি আর আবরার একজন খ্যাতিমান গবেষক ও শিক্ষক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত ছিলেন এবং শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। তিনি রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্টস রিসার্চ ইউনিট (রামরু)-এর প্রতিষ্ঠাতা সমন্বয়ক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তার নেতৃত্বে রামরু দীর্ঘদিন ধরে শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ে গবেষণা ও নীতিনির্ধারণে কার্যকর ভূমিকা রেখে আসছে।
উল্লেখ্য, অধ্যাপক আবরারের শিক্ষা ও গবেষণার অভিজ্ঞতা নতুন সরকারকে সহায়তা করতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। তার নেতৃত্বে দেশের শিক্ষাখাতে নতুন কিছু সংযোজিত হবে এবং তিনি শিক্ষানীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
শিক্ষা খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, অধ্যাপক আবরার দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি, নীতি প্রণয়ন ও গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তাই তার এই দায়িত্ব গ্রহণ দেশের উচ্চশিক্ষা এবং গবেষণা কার্যক্রমের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করবেন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণামুখী শিক্ষার দিকে নিয়ে যেতে ভূমিকা রাখবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে, দেশের নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে তার যুক্ত হওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ ও বিশ্লেষকরা। তার অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমকে আরও ফলপ্রসূ করতে সহায়তা করবে।
নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর সি আর আবরার বলেন, “আমি শিক্ষা খাতের উন্নয়নে কাজ করতে চাই এবং দেশের তরুণ সমাজকে দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে নীতি প্রণয়নে ভূমিকা রাখতে চাই।”
এদিকে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যান্য উপদেষ্টারাও শপথ গ্রহণ করেছেন এবং তাদের বিভিন্ন দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছে, এই উপদেষ্টা পরিষদ দেশের চলমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
অধ্যাপক সি আর আবরারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, গবেষণা এবং শিক্ষানীতি নিয়ে কাজ করার দক্ষতা শিক্ষাক্ষেত্রে নতুন গতিশীলতা আনতে পারে বলে অনেকেই মনে করছেন।