আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস, তবে বাড়ছে নারীর নিরাপত্তাহীনতা

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নারীরা তাদের অধিকার, মর্যাদা এবং স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছে, কিন্তু একদিকে যেমন নারীদের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, তেমনি অন্যদিকে তাদের নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। নারীরা আজও নানা ধরনের বৈষম্য, সহিংসতা এবং শোষণের শিকার হচ্ছেন। বিশেষত, পরিবার, সমাজ এবং কর্মস্থলে নারীরা এখনও নির্যাতন ও অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন, যা তাদের নিরাপত্তার প্রশ্নকে আরও জটিল করে তুলছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা, ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন, অবমাননা, পারিবারিক সহিংসতা এবং সামাজিক বৈষম্য আজও সমাজে ব্যাপকভাবে বিদ্যমান। বিশেষত, শহরাঞ্চলে যেখানে উন্নতির দিকে ধাবিত হওয়া দৃশ্যমান, সেখানে নারীরা যে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পুলিশি সহায়তা, আইন এবং বিচার ব্যবস্থার নানা সীমাবদ্ধতা এবং সামাজিক মনোভাব নারীদের জন্য সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে।

এতকিছুর মাঝেও আন্তর্জাতিক নারী দিবস নারীদের অধিকার, মর্যাদা এবং সমতার জন্য সচেতনতা তৈরির এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। তবে, নারীর নিরাপত্তাহীনতা বিষয়টি এখনো একটি বড় সংকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিনই কোথাও না কোথাও নারীরা সস্তা কিংবা উচ্চ পর্যায়ের সহিংসতার শিকার হচ্ছেন, যার ফলে তারা তাদের মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হচ্ছেন। এটি এমন এক পরিস্থিতি, যেখানে নারীদের সুরক্ষা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে নারীর নিরাপত্তাহীনতা নানা রকমের। পারিবারিক সহিংসতা, কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ, রাস্তাঘাটে নিপীড়ন এবং সামাজিক বৈষম্য এই নিরাপত্তাহীনতার প্রধান কারণ। অনেক ক্ষেত্রে, নারীদের বিষয়টি সমাজে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে না, এবং পরিবার কিংবা সমাজে একে অবহেলা করা হচ্ছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কার্যক্রমও নারীদের প্রতি সহিংসতা মোকাবিলায় যথেষ্ট কার্যকরী হচ্ছে না।

নারীদের নিরাপত্তা বিষয়ক সচেতনতা তৈরি, আইনজীবী, প্রশাসন ও শিক্ষাবিদদের সহযোগিতার মাধ্যমে এই সমস্যা মোকাবিলা করা যেতে পারে। নারীর প্রতি সহিংসতার ক্ষেত্রে সঠিক আইন ও শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা আর ভয় পেয়ে নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন। সমাজের প্রতিটি স্তরে নারীর সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারলেই, সেই সমাজ উন্নতির পথে এগিয়ে যাবে।

অবশেষে, আজকের দিনটি নারীদের সংগ্রামের দিন। নারীরা যেভাবে সমাজে সমতার জন্য লড়াই করছেন, সেই সংগ্রামকে সম্মান জানাতে হবে। তবে, এই সংগ্রাম সফল হতে গেলে তাদের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে, যেন তারা নিজেদের অধিকারকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারেন।

আজকের এই আন্তর্জাতিক নারী দিবসে সবাইকে একযোগভাবে নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করতে হবে, এবং সমাজে নারীশক্তির স্বীকৃতি দিতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ