ধর্ষণের মামলার তদন্ত ১৫ দিনে, বিচার ৯০ দিনের মধ্যে: আইন উপদেষ্টা

সরকার ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের মামলার বিচার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও কার্যকর করতে বিদ্যমান আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন সংশোধনী অনুসারে, ধর্ষণের মামলার তদন্ত ৩০ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে এবং বিচার কাজ ৯০ দিনের মধ্যে শেষ করতে হবে। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

রোববার (৯ মার্চ) আইন মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এই তথ্য দেন অধ্যাপক আসিফ নজরুল। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম।

সম্প্রতি মাগুরায় আট বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই সরকার ধর্ষণ সংক্রান্ত আইনের সংশোধন আনতে উদ্যোগী হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা জানান, ধর্ষণ বা নারী নির্যাতন রোধে বেশ কিছু আইনি পরিবর্তনের পরিকল্পনা আগেই ছিল। তবে সাম্প্রতিক ঘটনা বিবেচনায় নিয়ে দ্রুত আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংশোধনী অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলায় নির্ধারিত তদন্ত কর্মকর্তা অবশ্যই ১৫ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করবেন এবং তাঁকে পরিবর্তন করা যাবে না। পূর্বে তদন্ত কর্মকর্তা ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে ব্যর্থ হলে তাঁকে বদলানো হতো, যা মামলার দীর্ঘসূত্রিতার কারণ হতো।

বিচারকার্যের সময়সীমাও অর্ধেক কমিয়ে ৯০ দিন নির্ধারণ করা হচ্ছে। অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “ধর্ষণের মামলায় ৯০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করতেই হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে বিচার সম্পন্ন না হয়, তবে শুধুমাত্র সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার কারণে কোনো আসামিকে জামিন দেওয়া যাবে না। আগে ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার না হলে জামিন পাওয়ার সুযোগ ছিল।”

এছাড়া, ধর্ষণের মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় গাফিলতি হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিধানও যুক্ত করা হবে।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, বর্তমানে ধর্ষণের মামলায় ডিএনএ পরীক্ষা প্রয়োজন হয়, কিন্তু দেশের অনেক জায়গায় এই পরীক্ষা করার সুবিধা নেই। তাই সংশোধিত আইনে বিচারক যদি মনে করেন, শুধুমাত্র চিকিৎসা সনদের ভিত্তিতে তদন্ত ও বিচার চালানো সম্ভব, তাহলে তিনি তা করতে পারবেন।

মাগুরার ধর্ষণের মামলার প্রসঙ্গে অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, এই মামলার তদন্ত ও বিচার দ্রুত শেষ করতে আইন মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি দপ্তর সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবে, যাতে কোনো ধরনের বিলম্ব না হয়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ