রাজধানীর ঐতিহাসিক রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)। জুলাই মাসের শহীদদের স্মরণে মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকালে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন ও স্মরণসভা
এনসিপির একটি প্রতিনিধিদল সকালে রায়েরবাজার শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে গিয়ে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ সময় সংগঠনের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। নেতারা শহীদদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে বলেন, “এই শহীদরা জাতির জন্য যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তা কখনো ভুলে যাওয়ার নয়। তাঁদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয়েছে।”
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন এনসিপির সভাপতি জনাব মাহমুদ হাসান, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। তাঁরা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং তাঁদের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন।
শহীদদের অবদান ও ত্যাগের স্বীকৃতি
এনসিপির নেতারা বলেন, “জুলাই মাসের এই শহীদরা দেশের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন। তাঁদের স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “স্বাধীনতা অর্জনের পরও দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে অনেক বুদ্ধিজীবী, নেতা ও কর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।”
শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এনসিপি একটি সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করে। সেখানে বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জনের পেছনে শহীদদের অবদান রয়েছে। তাদের স্মরণে আমাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে, যেন দেশের মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পায়।”
নেতারা আরও বলেন, “শহীদদের প্রতি সম্মান জানাতে হলে শুধু ফুলেল শ্রদ্ধা জানানোই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে।”
দেশের জন্য কাজ করার আহ্বান
সভায় এনসিপির সভাপতি মাহমুদ হাসান বলেন, “আমাদের নতুন প্রজন্মকে শহীদদের আত্মত্যাগ সম্পর্কে জানাতে হবে, যাতে তারা দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করে।”
সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, “শহীদদের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে হলে আমাদের সবাইকে মিলে দুর্নীতি, অন্যায় ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে।”
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ
এনসিপির নেতারা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য শহীদরা যে অবদান রেখেছেন, তা বিশ্ববাসীকে জানাতে হবে। আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে হবে।”
তারা আরও বলেন, “যারা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, তাদের প্রতিহত করতে হবে। দেশের অগ্রগতি ধরে রাখতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।”
শহীদদের স্মরণে নতুন কর্মসূচি
এনসিপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় যে, “আগামী বছর থেকে শহীদদের স্মরণে আরও বৃহৎ কর্মসূচি নেওয়া হবে, যাতে জনগণকে তাঁদের আত্মত্যাগের ইতিহাস সম্পর্কে সচেতন করা যায়।”
এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শহীদদের জীবন ও অবদানের ওপর সেমিনার, র্যালি এবং আলোচনা সভা আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে নেতারা জানান।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নেতারা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং দেশের কল্যাণে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেন। তারা বলেন, “এই শহীদেরাই আমাদের অনুপ্রেরণা। আমরা তাঁদের দেখানো পথেই চলব এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করব।”
এভাবেই রায়েরবাজার কবরস্থানে জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে এনসিপি, যা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দেয়।