মাইক্রোস্কোপ আবিষ্কারের পর আজকের বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে প্রতিটি জীবের কোষের ৯০ শতাংশ পানি দিয়ে গঠিত। অথচ কোরআন চৌদ্দ শ বছর আগেই সে তথ্য আমাদের জানিয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম।’ (সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত : ৩০)
বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে লোহার আবিষ্কার মাটি থেকে নয়, বরং তা আমদানি করা হয়েছে। বিজ্ঞান এখন প্রমাণ করেছে যে, হাজার হাজার বছর আগে মহাকাশ থেকে একটি উল্কাপিণ্ড (Meteorites) পৃথিবীতে আঘাত হানে, যার কারণে পৃথিবীতে লোহা ছড়িয়ে পড়ে। অথচ আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘এবং আমি সৃষ্টি করেছি লোহা, যার ভেতর আছে রণশক্তি এবং মানুষের জন্য বহুবিধ কল্যাণ।’ (সুরা আল হাদিদ, আয়াত : ২৫)
বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে, আকাশ আমাদের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। সূর্যের যে রশ্মি পৃথিবীর জন্য ক্ষতিকর, আকাশের স্তর (Layers) সে ক্ষতিকর রশ্মিকে আটকে দেয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : এবং আমি আকাশকে করেছি এক সুরক্ষিত ছাদ। (সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত- ৩২)
এই পাহাড়-পর্বত পৃথিবীকে স্থির করে রেখেছে। যদি পাহাড়-পর্বত না থাকত তাহলে পৃথিবী এখানে, সেখানে দুলতে শুরু করত। এর শিকড় আমাদের ধারণার চেয়ে পৃথিবীর খুব গভীরে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : আমি কি করিনি ভূমিকে বিছানা আর পাহাড়কে (ভূমিতে প্রোথিত) কীলক? (সুরা আন নাবা, আয়াত- ৬,৭)মহাবিশ্ব ক্রমবর্ধমান
বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং বিংশ শতাব্দীতে এসে প্রমাণ করেছে যে, মহাবিশ্ব ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে। এর আগে বিশ্ব এই তথ্য সম্পর্কে কল্পনাও করতে পারেনি। অথচ আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন চৌদ্দ শ বছর আগেই। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘আমি আকাশ নির্মাণ করেছি আমার ক্ষমতাবলে এবং আমি অবশ্যই মহা সম্প্রসারণকারী।’ (সুরা আজ-জারিয়াত, আয়াত : ৪৭)সূর্য তার কক্ষপথে চলমান
ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত পৃথিবী বিশ্বাস করত যে সূর্য স্থির, গ্রহ এবং পৃথিবী তার চারপাশে ঘূর্ণায়মান। কিন্তু এই থিওরি ভুল প্রমাণিত হয়। এখন বিজ্ঞান বলছে সূর্যও তার কক্ষপথে ঘুরছে। অথচ কোরআন বহু আগেই এই থিওরি বলে দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ করে।’ (সুরা আল আম্বিয়া, আয়াত : ৩৩)
এটি প্রমাণিত হয়েছে যে যখন কেউ মিথ্যা বলে, তখন তার কপালের দিকে মস্তিষ্কে একটি গভীর ভাবাবেগ (তবধষ) সৃষ্টি হয় এবং একটি লব (খড়নব) তৈরি হয়। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘সাবধান, সে যদি বিরত না হয় তবে আমি তাকে অবশ্যই হেঁচড়াইয়া নিয়ে যাব, মস্তকের সম্মুখভাগের কেশগুচ্ছ ধরে। (তাহলো) মিথ্যাচারী, পাপিষ্ঠের কেশগুচ্ছ।’ (সুরা আল আলাক, আয়াত : ১৫,১৬)
ব্যথা অনুভব করার ক্ষমতা আমাদের পুরো শরীর জুড়ে। এটি ঊনবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত হয়েছিল, তার আগে বিজ্ঞান বলেছিল যে, ব্যথা মস্তিষ্কের মাধ্যমে অনুভূত হয়। এখন এই তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়েছে। অথচ কোরআন চৌদ্দশত বছর আগেই এই থিওরি বলে দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন : ‘যখনই তাদের চামড়া জ্বলে সিদ্ধ হয়ে যাবে, তখন আমি তাদেরকে তার পরিবর্তে অন্য চামড়া দিয়ে দেব, যাতে তারা শাস্তির স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাক্ষমতাবান প্রজ্ঞাময়।’ (সুরা আন নিসা, আয়াত : ৫৬)
- আল কুরআন ওয়াল ইলম/ড. আহমদ মাহমুদ সুলাইমান
- আল কুরআন ওয়াল ইলমুল হাদীস/ড. মরিস বুকাইলি
- আল কুরআন ওয়াল ইলমুল হাদীস/ড. আবদুর রাজ্জাক নাওফেল
- খলকুস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ/ড. মাহমুদ আব্বাস
- The Qur’an & Modern Science/DR. Maurice Bucaille
- The Qur’an & Modern Science/DR. Zakir Naik
- ইসলাম আওর সাইন্স/যুলফিকার আহমদ নকশাবন্দী দা.বা.