মিথুন আশরাফ : যে দলটির বিপক্ষে ২০১৩ সাল থেকে সব ফরমেট মিলিয়ে টানা ১৪টি সিরিজ হারেনি বাংলাদেশ, সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এবার তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হেরে গেল বাংলাদেশ! তিনটি ম্যাচেই মাঝপথে এলোমেলো হয়ে যায় বাংলাদেশ। অতঃপর হার হয়েছে। এমন চলতে থাকলে সামনে যে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ ও অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ রয়েছে, সেখানেও তো বেহাল দশাই হবে।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৭ রানে হারে বাংলাদেশ। সিরিজে ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। ২০৫ রান করে ফেলে জিম্বাবুয়ে। শেষ ১০ ওভারেই ১৩১ রান তুলে জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে জিতে বাংলাদেশ। তাতে সিরিজ ১-১ সমতা আসে। এই ম্যাচেও জিম্বাবুয়ে যে ১৩৫ রান করে, তাতেও শেষ ১০ ওভারে ৮৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। ৩১ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর এমন স্কোর গড়ে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ জিতে ঠিক। কিন্তু মাঝপথে যে দল বারবার এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে, তার প্রমান আবার মিলে। তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ১০ রানে হারে বাংলাদেশ। তাতে করে সিরিজ হার হয়ে যায়। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে জিম্বাবুয়ে। প্রথমবারের মতো জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হার হয় বাংলাদেশের। শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৬৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে জিম্বাবুয়ে। ১৩ ওভারও শেষ হয়। সেখান থেকে শেষ ৭ ওভারে ৮৯ রান করে জিম্বাবুয়ে। ম্যাচটিতে ১৫তম ওভারেই ৩৪ রান নিয়ে ফেলেন রায়ান বার্ল। স্পিনার নাসুম আহমেদের করা এই ওভারেই আসলে খেলা ঘুরিয়ে ফেলেন বার্ল। এই ম্যাচটিতেই যে নিয়ন্ত্রন নেয় জিম্বাবুয়ে, শেষপর্যন্ত বজায় রেখে জিতেও যায়। তাতে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হারায় জিম্বাবুয়ে। ২০১৩ সালের পর থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা ১৪টি সিরিজে জিততে পারেনি জিম্বাবুয়ে। অবশেষে আনন্দের জয় মিলে।
তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অধিনায়ক থাকা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত মাঝের ওভারেই যে গড়মিল হচ্ছে, সেই কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ম্যাচটা থেকে সরে যাচ্ছি মাঝের ওভারে। যদি বোলিংয়ে দেখেন, তাহলে মাঝের ওভারে আমরা উইকেট বের করতে পারছি না। ব্যাটিংয়েও একই ঘটনা। মাঝের ওভারে খেলাটা যেভাবে তৈরি করা দরকার, সেভাবে হচ্ছে না। যে কারণে শেষের দিকে আমরা চাপে পড়ছি।’ সাথে যোগ করেন, ‘টি-টোয়েন্টিতে যদি আপনি খুব দ্রুত উইকেট হারাতে থাকেন, তাহলে রান তাড়া করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। এখানে অবশ্যই হিসাব করে খেলাটা খেলতে হবে। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে সেটা আমরা পারিনি, যে কারণে ম্যাচ হেরেছি।’
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গতবছর বাংলাদেশের বেহাল দশা হয়েছে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেই হারে। এরপর সুপার-১২ এ টানা পাঁচ ম্যাচ হারে। সেই থেকে এখনও কোন টি-টোয়েন্টি সিরিজে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এ বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ১-১ ড্র করে। এছাড়া পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর জিম্বাবুয়ের কাছে সিরিজে হারল বাংলাদেশ। সামনে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপ আছে। কী হবে? সৈকত আশাবাদি, ‘আপনি দেখেন, এখানে আসার আগে যেমন পরিকল্পনা করেছি, কত রান করতে চাই। পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব হচ্ছিল। টি-টোয়েন্টিতে সামনে এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপ আছে; সাকিব ভাই আসবেন, আরও প্লেয়ার আসবে। ইনশা আল্লাহ আমরা ভালো করব।’