Search
Close this search box.

রশিদকে ‘ভয়’ পেয়ে আগে ব্যাটিং, অতঃপর সাকিববাহিনীর হার

রশিদকে ‘ভয়’ পেয়ে আগে ব্যাটিং, অতঃপর সাকিববাহিনীর হার

মিথুন আশরাফ – বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের জন্য স্পিনার রশিদ খান আতঙ্ক! তা আগেই জানা ছিল। কিন্তু তাই বলে এতটাই ভয় যে এজন্য আগে ব্যাটিং নিয়ে নিতে হবে? তাই হয়েছে। রশিদকে মোকাবেলার ‘ভয়’ থেকে টস জিতেও আগে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অতঃপর হারও হয়েছে নিয়তি। শুধু রশিদ খানকে ভয় থেকেই হার হয়েছে, এমনও নয়। আরও অনেক কারণেই এই হার হয়েছে। একটা সময় ৬ ওভারে আফগানিস্তানের জিততে ৬৩ রানের দরকার ছিল। তখন বাংলাদেশের মুঠোতেই ছিল ম্যাচ। কিন্তু নজিবুল্লাহ জাদরান এমনই বিধ্বংসী ব্যাটিং করলেন যে ম্যাচই হাত থেকে ফসকে গেল।

আগে ব্যাটিং করেই বিপদ হয়েছে

ম্যাচের আগে পিচ রিপোর্টে ধারাভাষ্যকার রাসেল আর্নল্ড বলছিলেন, টস জিতলে আগে বোলিং করা উচিত। কিন্তু সাকিব নেন ব্যাটিং। সাকিবের যুক্তি ছিল, ‘উইকেট শুরুতে ব্যাটিংয়ের জন্য একটু ভালো থাকবে বলে মনে হচ্ছে। আমরা চাই ভালো একটি স্কোর গড়ে আফগানদের চ্যালেঞ্জ জানাতে।’ সেই চ্যালেঞ্জ জানালোও বাংলাদেশ। কিন্তু নজিবুল্লাহ জাদরান ১৭ বলে ১ চার ও ৬ ছক্কায় ঝড়ো ব্যাটিং করে অপরাজিত ৪৩ রান করেই ম্যাচ জিতিয়ে দেন। বাংলাদেশের গড়া ১২৭ রান ১৮.৩ ওভারেই অতিক্রম করে আফগানিস্তান ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে। আগে ব্যাটিং করাই বুমেরাং হয়ে যায়। আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী বলেছেন, ‘আমি টসের সময়ও বলেছি, নতুন পিচ, মাটি পরিবর্তন হয়েছে। এই পিচে কেউ খেলেনি। তাই আগে বোলিং করে ভালো হয়েছে। পিচ সম্পর্কে জানার সুযোগ পেয়েছি। বুঝতে পেরেছি পিচ কেমন আচরণ করছে। সেটা কাজে লাগিয়েই আমরা দ্রুত উইকেট নিতে পেরেছি আর প্রতিপক্ষ দলকে চাপে রাখতে পেরেছি।

রশিদের ভয়েই আগে ব্যাটিং

রশিদ খান সবদলের জন্যই ভয়ংকর। তার স্পিনে কাত হয় সব দলই। বাংলাদেশকেও বারোটা বাজান রশিদ। ৪ ওভার বোলিং করে ২২ রান দিয়ে ৩ উইকেট শিকার করে নেন রশিদ। মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন ধ্রুব ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে আউট করেন রশিদ। এই রশিদের ভয়েই যে আগে ব্যাটিং নিয়ে ধরা খেয়েছে বাংলাদেশ, তা বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অপরাজিত ৪৮ রান করা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতই খোলাসা করেছেন। তিনি বলেছেন,  ‘ওভারপ্রতি ৭-৮ রান করে লাগলে আপনি চাইবেন না রশিদ খানের বিপক্ষে খেলতে। আমরা চেয়েছি আগে ব্যাটিং করে শুরুতে রান এগিয়ে রাখতে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটি করতে পারিনি।’

 

বিধ্বংসী ব্যাটিং করে নজিবুল্লাহ জাদরানই ডুবিয়ে দেন বাংলাদেশকে

 

নজিবুল্লাহ ‘শো’তেই কাত বাংলাদেশ

আফগানিস্তান যখন ৬২ রানে, তখন মোহাম্মদ নবী আউট হন। এরপর ব্যাট হাতে নামেন নজিবুল্লাহ। তখনও জিততে ৬৬ রান লাগে। হাতে বল থাকে ৪২টি। এমন সময়ে গিয়ে ৩০ বলে জিততে ৬৩ রান লাগে। নজিবুল্লাহ এমনই বিধ্বংসী ব্যাটিং করেন, ব্যাটিং ‘শো’ দেখান, বাংলাদেশের হাত থেকে ম্যাচ ছিটকে যায়। সাকিব মনে করেছিলেন ম্যাচটি বাংলাদেশের হাতেই আছে। কিন্তু ৬ ছক্কা হাকিয়ে ম্যাচ বের করে নেন নজিবুল্লাহ। সাকিব তাই বলেছেন, ‘আমরা জানতাম নাজিবউল্লাহ বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান। সে যেভাবে খেলেছে, ম্যাচটা আমাদের কাছ থেকে বের করে নিয়ে গেছে। শেষ ৬ ওভারে ওদের ৬০ রানের মতো (৬৩) দরকার ছিল। আমাদের মনে হয়েছিল, এরকম উইকেটে ম্যাচ আমাদেরই হাতে। নাজিবউল্লাহকে কৃতিত্ব দিতে হবে, যেভাবে সে খেলেছে।’

শুরুতেই ৪ উইকেট হারিয়ে খাদে বাংলাদেশ

শুরুতেই ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেললে আর কী থাকে ম্যাচে। তাও আবার নাঈম শেখ, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের মতো ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন। ভোগান্তির শুরুটা সেখানেই হয়েছে। ভালো স্কোরের আশাও সেখানেই শেষ হয়ে যায়। সৈকতের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে তাও ১২৭ রান করা গেছে। কিন্তু জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়নি। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান তাই বলেছেন, ‘প্রথম ৭-৮ ওভারে ৪ উইকেট হারালে কাজটা সবসময়ই কঠিন হয়ে ওঠে। তার পরও উইকেট যেরকম ছিল, আমাদের ১০-১৫ রানের ঘাটতি ছিল। বোলাররা অসাধারণ রকম ভালো বোলিং করেছে, প্রথম ১৫ ওভারে ম্যাচ আমাদেরই ছিল। শেষ ৫-৬ ওভারেই ওরা আমাদের কাছ থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেছে। আফগানিস্তানকে কৃতিত্ব দিতে হবে, তারা যেভাবে খেলেছে।’

১০-১৫ রানের ঘাটতি

বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব বলেছেন, ১৪০ রানের আশেপাশে স্কোর থাকলে হয়তো খেলার চিত্রটা ভিন্ন হতে পারত। তিনি বলেছেন, ‘এখানে ব্যাটিং করা কঠিন ছিল, নিচু ছিল। ওরা ভালো করেছে, ফলে ওদের কৃতিত্ব দিতে হবে। তবে ১০-১৫ রান কম করেছি আসলে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ